আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
তৃণমূল দল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন দু’বারের প্রাক্তন পুরচেয়ারম্যান। এই খবর চাউর হতেই প্রাক্তন পুরচেয়ারম্যানকে দলে স্থান দেওয়া নিয়ে বিজেপির অন্দরমহলে আলোচনা শুরু হয়। যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, এবিষয়ে নীলরতনবাবুর গ্রহণযোগ্যতা ও প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে দলের বুথ ও মণ্ডলস্তরের নেতৃত্বদের সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই জেলা ও রাজ্যস্তরে বিষয়টি নিয়ে ভাববে।
এদিকে বিজেপির নিচুস্তরের কর্মী-সমর্থকরা প্রথম থেকেই পুরচেয়ারম্যানকে দলে নেওয়ার বিরোধিতা করতে শুরু করে দেন। বুথ ও মণ্ডলস্তরের নেতৃত্বদের ক্লিনচিট না পাওয়াতে এখনই গেরুয়া শিবিরে নীলরতনবাবুর যোগদান করতে না পারার বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বহরমপুর পুরসভায় বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও সরকারি প্রকল্পের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে এই মুহূর্তে নীলরতনবাবুকে বিজেপিতে নেওয়া হলে সাধারণ মানুষ ও দলের কর্মী-সমর্থকরা দলের প্রতি আস্থা হারাবে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, বর্তমান রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন এক সময়ের বহরমপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ কংগ্রেস নেতা অধীর ঘনিষ্ঠ নীলরতনবাবু। তাঁর নিজস্ব ব্যক্তি কারিশমাও নেই যে কারণে গেরুয়া শিবিরের কাছে তিনি দলের সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন। তৃণমূল দলে থেকেও কার্যত কোণঠাসা করা হয়েছে নীলরতনবাবুকে। আগামী ১৩জুলাই কলকাতায় ২১জুলাইয়ের শহিদ দিবসের কর্মসূচি সামনে রেখে বেলডাঙায় শাসকদলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে তাৎপর্যপূর্ণ জনসভা হবে। সেই জনসভায় প্রাক্তন পুরচেয়ারম্যান ডাক পাবেন না বলে মনে করেছে তৃণমূলের একাংশ।
প্রসঙ্গত, প্রাক্তন এই পুরচেয়ারম্যান ২০১৬সালের ১৮সেপ্টেম্বর কংগ্রেস ছেড়ে ১৭জন কাউন্সিলারকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতায় তৃণমূলে যোগদান করেন। ১৯৮৬ থেকে ২০১৬সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৩০বছর পুরসভা কংগ্রেসের দখলে থাকলেও সেই বছর সেপ্টেম্বর মাসে তা কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়ে যায়। তৃণমূলের দখলে আসে পুরবোর্ড। এরপর এবার লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে এই পুরসভায় ২৮টি ওয়ার্ডে আবারও কংগ্রেস নিজেদের প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে প্রমাণ করে, পুরবোর্ড তৃণমূলের দখলে গেলেও মানুষ কংগ্রেসের প্রতি এখনও আস্থাশীল। পাশাপাশি লোকসভার ফলাফলের নিরিখে বহরমপুর পুরসভার বিরোধী আসনে উঠে আসে গেরুয়া শিবির। তৃতীয় স্থানে নেমে যায় তৃণমূল।
এবার ভোটে নীলরতনবাবু নিজের ওয়ার্ডেও দলের লিড ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবির কোনওভাবেই তৃণমূলের প্রাক্তন পুরচেয়ারম্যানকে দলে নিতে নারাজ। এবিষয়ে বিজেপির বহরমপুর শহর(উত্তর) টাউন সভাপতি বিভাস হাজরা বলেন, বিস্তর অভিযোগ রয়েছে প্রাক্তন পুরচেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। তাই নিচুতলার কর্মী-সমর্থক ও মণ্ডল নেতৃত্ব কোনওভাবেই তাঁকে দলে নেওয়ার বিষয়কে সমর্থন করছে না। আমরা তৃণমূল, কংগ্রেস, সিপিএম সব দলের মানুষকেই বিজেপিতে আহ্বান জানাতে পারি। তবে যাঁকে দলে নেব, তাঁর ভাবমূর্তি স্বচ্ছ থাকতে হবে। আগে নীলরতনবাবু সাধারণ মানুষের কাছে নিজের স্বচ্ছতা প্রমাণ করুন, তারপর বিজেপিতে আসবেন।
ঘনিষ্ঠ মহলে নীলরতনবাবু দলের প্রতি ক্ষোভের কথা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি বিজেপিতে যোগদানের বিষয়টি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বার বার করে দলবদল করার মানুষ আমি নই। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মুর্শিদাবাদের সংসদ সদস্য আবু তাহের খান বলেন, ২১জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় নীলরতনবাবুকে ডাকা হবে।