বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানাঘাট-১ ব্লকের হবিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা বিজেপি কর্মী রামচন্দ্র ঘোষের বাড়িতে মঙ্গলবার রাত প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ হঠাৎই ইট বৃষ্টি শুরু হয়। পরে দু’রাউন্ড গুলি চলে বলে অভিযোগ। রামচন্দ্রবাবু বলেন, অন্যান্য দিনের মতো মঙ্গলবার নিজের দ্বিতল বাড়িতে আমার পরিবারে সকলে ছিলাম। হঠাৎই জানালার কাচে ইট এসে পড়ে। এরপর গুলি চলে। আমরা বর্তমানে যেহেতু বিজেপি করি তাই তৃণমূল আমাদের হুমকি দিয়েছে। বিজেপি না করার জন্য বিভিন্ন সময় হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা তা সত্ত্বেও বিজেপিতে যুক্ত রয়েছি। তাই আমাদের উপর আক্রোশ মেটাতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
রামবাবুর পরিবারের দুই মহিলা সদস্য দীপালিদেবী ও পূজাদেবী বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে তৃণমূলের লোকজন বিভিন্ন সময়ে আমাদের উপর আক্রমণ করেছে। আগেও বিজয় মিছিল থেকে আমাদের বাড়ির উপর চড়াও হয়েছিল তৃণমূল। বর্তমানে আমরা রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছি। রামবাবুর বাড়ি থেকে প্রায় ৬০ ফুট দূরত্বে রয়েছে তাঁর খুড়তুতো ভাই দেবকুমার ঘোষের বাড়ি। তিনিও বর্তমানে বিজেপির একজন সক্রিয় কর্মী। ওইদিন রাতে দেবকুমারবাবুর বাড়িতেও হামলা হয়। দেবকুমারবাবুর বাড়িতে ছিলেন না। তিনি সস্ত্রীক পুরী বেড়াতে গিয়েছেন। ঘটনার সময় তাঁর বাড়িতে তাঁর ছোট ছেলে চিন্ময় ঘোষ ছিলেন।
চিন্ময়বাবু বলেন, ওই রাতে বাড়িতে আমি একাই ছিলাম। দাদা তন্ময় অনুষ্ঠান বাড়িতে গিয়েছিল। রাত তখন সাড়ে ১২টা হবে। হঠাৎই গামছায় মুখ বাঁধা সাতজন দুষ্কৃতী আমাদের বাড়ির সামনে এসে টিনের ঘরে এলোপাথাড়ি ইটবৃষ্টি করে। অন্যদিকে, বাড়ি ফেরার সময় দাদার উপর হামলার চেষ্টা হয়। দাদা মোটরবাইকে চেপে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ফিরছিল। গ্রামের রাস্তা ধরতেই দুষ্কৃতীরা দাদাকে তাড়া করে। কোনও ক্রমে বাইকের গতি বাড়িয়ে সে বাড়ি আসে। বুধবার সকালে এলাকায় তদন্তে আসেন রানাঘাট থানার পুলিস আধিকারিকরা। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে রানাঘাট-১ ব্লকের হবিবপুর, রামনগর-১, রামনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত সহ বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল-বিজেপি রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে। এদিনের ঘটনায় ফের এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হবিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গোপাল ঘোষ ও তাঁর দাদা লক্ষ্মণ ঘোষ সক্রিয়ভাবে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। গোপাল ও লক্ষ্মণ রামচন্দ্রবাবুদের খুড়তুতো ভাই। ঘটনার সঙ্গে তাদের কেউ যুক্ত আছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও প্রধান গোপাল ঘোষ বলেন, গোটা গ্রামজুড়ে আমাদের অনেক আত্মীয় রয়েছে। কেউ অন্য দল করতেই পারে। তবে হামলার ঘটনার সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়। তৃণমূলের কেউ এই ঘটনা ঘটায়নি। অন্যদিকে, বিজেপি নদীয়া জেলা দক্ষিণের সম্পাদক সুফল সরকার বলেন, ভোটে জয়লাভের পর সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছে। জনসংযোগ হারিয়ে ওরা সন্ত্রাস চালাচ্ছে।
যদিও বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। রানাঘাট-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, তৃণমূলে কয়েকজন ছিল যারা এমন হিংসার ঘটনা ঘটাতো। তাদের কারও দলে কোনও স্থান হয়নি। তাই তারা সদ্য বিজেপিতে যোগদান করেছে। বিজেপির কর্মীরা নিজেরাই এই হিংসার ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের উপর মিথ্যা দোষারোপ দিচ্ছে। তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের কেউ এমন ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।