কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক জেনে ফেলায় ও তার প্রতিবাদ করায় নারকীয় অত্যাচারের শিকার হয়ে মর্মান্তিক পরিণতি হল ওই অন্তঃসত্ত্বা বধূর। চোখে রড ঢুকিয়ে, নোড়া দিয়ে দাঁত ভেঙে ঘরের ভিতর বেঁধে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার নবগ্রামের বাসিন্দা সরস্বতীর সঙ্গে প্রায় একবছর আগে মোহনপুর গ্রামের পেশায় ট্রাকচালক অমল মেটের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর উপর সন্দেহ হয়। স্বামী অন্য মহিলার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত রয়েছে তা বুঝতেও পারেন সরস্বতী। বেশ কয়েকবার এনিয়ে ঝামেলা হয় বাড়িতে। তার ফলে সরস্বতীর কপালে জুটল অকথ্য অত্যাচার। প্রায়দিনই অমল মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে এসে সরস্বতীকে মারধর করত। স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের কথা ও তাকে মারধরের কথা সে তার বাবা-মাকেও জানান। তাঁরা সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন। এরই মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু তারপরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। অত্যাচারের মাত্রা দিনদিন বাড়তে থাকে। সোমবার রাতে অত্যাচার সীমা অতিক্রম করে। সরস্বতীর বাপেরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তাঁদের মেয়েকে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে নৃশংসভাবে মারধর করে পরে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। রাতেই ৯০শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। নানুর থানায় মেয়ের স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে মেয়েকে খুনের অভিযোগ করেন মৃতার বাবা সজল মাঝি। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। ঘটনায় মৃত বধূর শাশুড়িসহ দু’জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও মৃতার স্বামী ও শ্বশুর সহ পরিবারের বাকি সদস্যরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। ঘটনার নৃশংসতা দেখে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে বাকি রোগী ও তাঁদের পরিজনরা। কীভাবে একজন মানুষ এরকমভাবে নিজের স্ত্রীকে মেরে ফেলতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
মৃতার বাবা সজল মাঝি বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে নানাভাবে অত্যাচার করত। সে কথা মেয়ে আমাদের বহুবার জানিয়েছিল। আমরা তাকে মানিয়ে নিতে বলেছিলাম। ভেবেছিলাম সময় গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তা আর হল না। অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে মরতে হল আমার মেয়েকে। আমি চাই পুলিস ওদের খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিক।
মৃতার মা শেফালি মাঝি বলেন, জামাই মদ খেয়ে আমার মেয়েকে মারধর করত। তার শ্বশুরবাড়ির লোকেরাও প্রতিবাদ করত না, তাদেরও সায় ছিল। আমার মেয়েকে যেভাবে অত্যাচার করে মেরেছে, তাতে আমরা ওদের সবার ফাঁসি চাই।