কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
পুলিস কমিশনার দেবেন্দ্র প্রসাদ সিং বলেন, পুলিসকে মারধরের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিন্ডিকেটরাজ বন্ধের দাবিতে রবিবার ওই এলাকার বিজেপি কর্মীরা জব্বরপল্লি এলাকায় তৃণমূলের একটি অফিসে তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পুলিস আসে। বিক্ষোভকারী বিজেপি কর্মীরা পুলিসকে এলাকায় সিন্ডিকেটরাজ বন্ধের জন্য দাবি জানায়। যদিও অভিযোগের কথা অস্বীকার করে তৃণমূল। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে তৃণমূলের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপরেই ওইদিন রাত ২টো নাগাদ পুলিস অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। দু’জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাতে থাকে। সেই সময় হঠাৎই বিজেপি কর্মী-সমর্থক সহ গ্রামবাসীরা পুলিসের উপর ইট, পাথর দিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
মঙ্গলবার সকালে ডিসিপি(পূর্ব) অভিষেক মোদির নেতৃত্ব বিশাল পুলিস বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স এলাকায় টহল দেয়। স্থানীয় বিজেপি কর্মী উৎপল গড়াই বলেন, তৃণমূলের সিন্ডিকেট অফিস বন্ধ করার দাবিকে কেন্দ্র করেই রাতে এলাকায় পুলিস তল্লাশি চালায়। এলাকার দু’জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছে। পুলিসের উপরে আমাদের কেউ হামলা চালায়নি।
এলাকার বাসিন্দা সরস্বতী বাগদি, শিখা বাগদি ও পূর্ণিমা বাউড়ি বলেন, রাতের অন্ধকারে পুলিস স্থানীয় তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালায়। বিজেপি করার অপরাধে এলাকার দু’জন যুবককে পুলিস ধরে নিয়ে গিয়েছে। এছাড়াও পুলিস তল্লাশি চালানোর নামে মহিলাদের গায়ে হাত দেয়। শাড়ি ছিঁড়ে দেয়। মহিলাদের টানাটানি করে। ঘরের জিনিসপত্র লণ্ডভণ্ড করে দেয়। ঘরের সমস্ত জিনিসপত্র ভাঙচুর করতে থাকে।
ফরিদপুর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, নির্বাচনের পর থেকেই পাটশাওড়া গ্রামে বিজেপির হার্মাদ বাহিনী গোটা এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। রবিবার বিজেপি নেতারা আমাদের একটি অফিসে তালা বন্ধ করে চলে যায়। আমরা থানায় খবর দিলে পুলিস তালা খুলে দিয়ে যায়। আবার সোমবার সকালে বিজেপি নেতারা এসে আমাদের অফিসে ঢুকে পড়ে। আমরা বিজেপি কর্মীদের নামে অভিযোগ জানাই। এরপর রাতে অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস তদন্ত করতে এলে পুলিসকে লক্ষ্য করে বিজেপি নেতাকর্মীরা ইট, পাথর ছুঁড়তে থাকে। গুলি চালায় বোমাবাজিও করে। ঘটনায় জখম পুলিস অফিসাররা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাটশাওড়া গ্রামের কয়েকজন তৃণমূল কর্মী মিলে আমরা এই অফিসটিতে ১৫ বছর ধরে ইট বালি সাপ্লাইয়ের ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু কেন্দ্রে বিজেপি জেতার পর থেকে বিজেপি নেতারা বলছেন, এই ব্যবসা এবার থেকে তাঁরা করবেন। তাই আমরা আইনের পথে গিয়ে পুলিসে অভিযোগ জানিয়েছি। গ্রামের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে বিজেপির হার্মাদরা পুলিসের উপর হামলা চালিয়েছে। বিজেপির গুন্ডামি আমরা মানব না।
পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপি কোনওভাবেই যুক্ত নয়। সম্পূর্ণভাবে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা সোমবার রাতে পুলিস নিয়ে বিজেপি কর্মীদের বাড়ি বাড়িতে তাণ্ডব চালায়। মহিলাদের শ্লীলতাহানি করে। তাঁদের কাপড় ধরে টানাটানি করে। তৃণমূল পরিকল্পিতভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ কর্মীরা এভাবে জখম হওয়া আমাদের কাছে খুবই দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা বলে মনে হয়েছে।
জখম পুলিস আধিকারিক ও কর্মীদের বিষয়ে হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ডাঃ জয়দ্বীপ ভাদুড়ি বলেন, সিআই অমিতাভ সেন মাথায় আঘাত পেয়েছেন। আঘাত গুরুতর হওয়ায় অস্ত্রপচার করা হয়েছে। অন্য দু’জনও চিকিৎসাধীন। তাঁদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।