কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
এছাড়াও সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে যারা দলে থেকেও দলের সঙ্গে বেইমানি করেছে তাঁদের চিহ্নিতকরণের কাজও শুরু হচ্ছে। দলীয় নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট প্রমাণ সহ সেই নাম গোপনে জেলা সভাধিপতির কাছে জমা করতে। এদিন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ব্লকে বিজেপি থেকে বিপুল ভোটে পিছিয়ে পড়ার জন্য বকুনি দিলেও তিনি ভালোমতোই জানেন, অধিক শাসনে দল ত্যাগের ঘটনা ঘটতে পারে। তাই প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের ঘটনা স্মরণে রেখে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া নেতাদের জন্যও বিকল্প পদ দেওয়ার ভাবনা রয়েছে বলে জানান। তবে এবারই প্রথম প্রচারপ্রিয় অনুব্রত তাঁর সাংগঠনিক বৈঠকে মিডিয়াকে ঘেঁষতে দেননি।
জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, সাংগঠনিক আলোচনা হয়েছে। দু’জন অঞ্চল সভাপতিকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অন্য দায়িত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া ব্লক সভাপতিকে বেশি করে সংগঠনে সময় দিতে হবে। আর পঞ্চায়েতে বসে পার্টি করলে চলবে না।
জেলার দু’টি আসনে তৃণমূল জয় পেলেও তৃণমূলের নাক কাটিয়েছে জেলা সদর সিউড়ি। শুধু শহরই নয়, জেলার সদর ব্লক সিউড়ি-১ এর সাতটি পঞ্চায়েতের মধ্যে ছ’টিতেও পিছিয়ে তৃণমূল। সাত হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে বিজেপি। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যে কড়িধ্যায় ব্লক অবস্থিত, যেখানে গত পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছিল শেখ দিলদারের সেই অঞ্চলেই প্রায় ছ’হাজার ভোটে পিছিয়ে তৃণমূল। মর্যাদার লড়াইয়ে হার, সবর্ত্রই শুধুই পরাজয়ের তথ্য। এই অবস্থায় মঙ্গলবার চুপিসারে সাংগঠনিক বৈঠকে সেরে নিতে চেয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। ডাকা হয়েছিল প্রতিটি অঞ্চল সভাপতি, প্রধান, ব্লক কমিটি, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, জেলাপরিষদ সদস্য ও উল্লেখযোগ্যভাবে বেশ কিছু প্রবীণ তৃণমূল কর্মীকে। জেলা সভাপতি অনুব্রতবাবু, সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলা সহসভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বৈঠক শুরু হয়। অঞ্চল ধরে ধরে হারের কারণ জানতে চাওয়া হয়, সঙ্গে চলে দাওয়াই।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের বেনিয়ম নিয়ে সরব হন নেতারা। জানানো হয়, পঞ্চায়েতের ভাগ বাঁটোয়ারার জন্য পার্টি করলে চলবে না, মানুষকে সময় দিতে হবে। দরকার ছাড়া নেতাদের পঞ্চায়েতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। দলীয় নেতৃত্ব এই নতুন প্রয়োগের শুরুটা করতে চেয়েছেন একেবারে ব্লক সভাপতির উপর দিয়েই। তিনি পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতিও। কিন্তু তাঁকে শুধু ব্লক অফিসে পড়ে থাকলে হবে না, তাঁকে দলের পিছনে সময় দিতে হবে। সেইমতো সিউড়িতে জেলা পার্টি অফিসে তাঁর জন্য একটি রুম বরাদ্দ করা হয়েছে। সোম থেকে বৃহস্পতি সেখানে ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত থেকে দলীয় কাজ এবং অভাব অভিযোগ শুনবেন ব্লক সভাপতি। তারপর বিকেলে তিনি যাবেন বিডিও অফিসে। এক জায়গায় বসে সংগঠনের কাজ দেখা চলবে না। ব্লক সভাপতিকে শুক্র থেকে রবি তিনদিন বিভিন্ন ব্লকে গিয়ে সংগঠনের কাজ দেখতে হবে।
এদিনের বৈঠক থেকে সিদ্ধান্ত হয়, মল্লিকপুরের অঞ্চল সভাপতি রঘুনাথ মণ্ডল ও তিলপাড়ার অঞ্চল সভাপতি বনোজ সাহাকে সরিয়ে দেওয়া হবে। তবে তাঁরা যাতে অন্যদলে চলে না যান সেজন্য অন্য পদ দেওয়া হবে। অঞ্চল সভাপতির পাশাপাশি বুথ সভাপতিদেরও রদবদলের ভাবনা রয়েছে। তবে পুরনো বুথ সভাপতিদেরও দলে ধরে রাখতে বিকল্প পদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠক থেকে। অন্যদিকে, পুরনো কর্মীদের বাড়তি গুরুত্ব দেওমার কথাও তুলে ধরেন বৈঠকে হাজির থাকা আদি তৃণমূলীরা।