পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
উল্লেখ্য, গত শনিবার বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনে তৃণমূল নেতাদের নিয়ে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে বাঁকুড়ায় লোকসভা নির্বাচনের সামগ্রিক ফলাফলের পর্যালোচনা করা হয়। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতের রণকৌশল স্থির হয়। শুভেন্দুবাবু ব্লক ধরে ধরে আলোচনা করেন। সভাপতিদের দাঁড় করিয়ে তিনি ব্লকের সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। ওই বৈঠকে মেজিয়া সহ কয়েকটি ব্লকে দলের স্থায়ী কমিটি নেই বলে তিনি জানতে পারেন।
তারপর তিনি বলেন, এতদিন এজেলায় সংগঠন মজবুত করার প্রয়াস সেভাবে নেওয়া হয়নি। উপর থেকে নেতারা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতেন। নীচেরতলার লোকদের কথা বলার সুযোগ ছিল না। ফলে যা হওয়ার হয়েছে। যেসব ব্লকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই, সেখানে দ্রুত ২০-২৫ জনের কোর কমিটি গঠন করতে হবে। অন্যান্য ব্লকেও কোর কমিটি গঠন বাধ্যতামূলক। ব্লক সভাপতিকে মাথায় রেখে ওই কমিটি করতে হবে। সহ সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদ আপাতত কাউকে দেওয়া হবে না। কমিটির সদস্যদের মাসে অন্তত দু’টি সভা করতে হবে। সপ্তাহে একটি করে সভা হলে ভালো হয়। বৈঠকে কোনও বিষয়ে মতানৈক্যের সৃষ্টি হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যর মত মান্যতা পাবে। সভার রেজ্যুলিউশন আমি প্রতি মাসে নিজে খতিয়ে দেখব। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কি না তা ব্লক সভাপতিকে কৈফিয়ত দিতে হবে। একইভাবে অঞ্চলেও কমিটি করে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, জেলা সভাপতির নেতৃত্বে গঠিত জেলা কমিটিও মাসে দু’বার বৈঠক করবে। ওই বৈঠকে ব্লক সভাপতিরা নিজ নিজ এলাকার রিপোর্ট পেশ করবেন। ব্লক সভাপতিদের আরও নমনীয় এবং উদার হতে হবে। অঞ্চল সভাপতি এবং ব্লক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। শুভেন্দুবাবু বলেন, দল যখন ক্ষমতায় ছিল না তখন আমি বাঁকুড়ার পর্যবেক্ষক ছিলাম। আবার দল যখন হারল তখন দিদি আমাকে এখানকার দায়িত্ব দিলেন। আমি খারাপ সময়ের পর্যবেক্ষক। তাই দলের স্বার্থে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হব না। আমি ‘প্যারাশুট নেতা’ নই। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছি। তাই জেলার প্রতিটি প্রান্তেই আমার নজর রয়েছে।
এদিকে, ওইদিনের সভায় বিভিন্ন পঞ্চায়েতে বিজেপি-র ডেপুটেশন এবং তৃণমূল সদস্যদের গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর বিষয়টি নিয়ে ব্লক সভাপতিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেই কথা শুনে শুভেন্দুবাবু বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে যে কেউ ডেপুটেশন জমা দিতে পারেন। তবে প্রধানদের ভয় পেতে বারণ করবেন। কেউ কোনও তথ্য চাইলে আরটিআই আইনের মাধ্যমে আবেদন করতে বলবেন। তৃণমূলের প্রতীকে জেতা কোনও পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপি-র আনা প্রস্তাবে সই করলে তাঁর সদস্যপদ বাতিলের জন্য দলের জেলা সভাপতির মাধ্যমে বিডিও-র কাছে আবেদন করবেন। যেসব প্রধান দলের অঞ্চল অফিসে আসেন না তাঁদের তালিকা তৈরি করে তাঁর কাছে জমা দেওয়ার জন্যও শুভেন্দুবাবু জানান। প্রধানদের সরকারি কর্মীর মতো ১০টা-৪টা পঞ্চায়েত কার্যালয়ে কাটানোর কোনও দরকার নেই বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেন। পঞ্চায়েত অফিসের পরিবর্তে দলীয় অফিসে সপ্তাহে অন্তত একদিন করে বসার জন্য তিনি নির্দেশ দেন।
শুভাশিসবাবু এদিন বলেন, আমি বাঁকুড়া শহরে বসে না থেকে গ্রামে গ্রামে ঘুরছি। প্রতিটি ব্লকে গিয়ে কোর কমিটি গঠন করব। কোর কমিটিতে নতুন মুখ আনার পাশাপাশি বসে যাওয়া নেতাদের গুরুত্ব দেওয়া হবে। একসময় ঘাম ঝরিয়ে সংগঠন করেছি। ফের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের জন্য প্রাণপাত করতে রাজি আছি। এদিন শালতোড়া ব্লকের নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়ানোর লক্ষ্যে বৈঠক করেছি।
তৃণমূলের মেজিয়া ব্লক সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, আমাদের ব্লকে স্থায়ী কমিটি নেই। দলের নির্দেশ মতো দ্রুত কোর কমিটি গঠন করে কর্মসূচি গ্রহণ করব।