রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
এদিন বেশকিছু সিনিয়র ডাক্তার, মেদিনীপুরের বুদ্ধিজীবী সমাজ আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ায়। শনিবার সন্ধ্যায় শহরে জুনিয়র ডাক্তার এবং ডাক্তারি পড়ুয়ারা এক বিশাল প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেছিল।
হাসপাতালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, গোটা পরিস্থিতির উপর আমাদের নজর রয়েছে। সবটা আমাদের হাতে নেই। পরিষেবা যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। সিনিয়র ডাক্তাররা পরিষেবা দিচ্ছেন। জরুরি বিভাগ আমাদের এখানে পুরোপুরি স্বাভাবিক।
যদিও জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে কার্যত শুনশান হয়ে পড়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। একমাত্র মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার হাব ছাড়া হাসপাতালের অন্য বিল্ডিংগুলিতে রোগীর পরিজনদেরও দেখা গিয়েছে খুব কম সংখ্যায়। ইতিমধ্যেই মেডিসিন, সার্জিক্যাল সহ একাধিক ওয়ার্ডের বহু রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ছুটি নিয়ে চলে যাচ্ছেন অনেকেই। এদিনও এরকম একাধিক চিত্র উঠে এসেছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সিনিয়র চিকিৎসকরা থাকলেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীদের দেখভাল করে থাকেন মূলত জুনিয়র ডাক্তাররাই। তাঁদের দেখা নেই। এমন পরিস্থিতিতে রোগীকে রেখে দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। তাই বাধ্য হয়েই অনেকে চলে যাচ্ছেন।
এদিন হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে কিছুটা দূরে গাছের ছাওয়ায় বসে ছিলেন সবংয়ের ষাটোর্ধ্ব রীতা মাইতি। হার্ট এবং স্নায়ূর সমস্যা রয়েছে তাঁর। এসেছিলেন শনিবার। কিন্তু আউটডোর বন্ধ থাকায় ওই বৃদ্ধার চিকিৎসা শুরু হয়নি। বাড়িও ফিরে যাননি তিনি। তিনি বলেন, শনিবার তো ডাক্তার পেলাম না। আবার বাড়ি গিয়ে আসব, সে অনেক সমস্যা। আমার কেউ নেই। রাতটা হাসপাতালেই কাটিয়েছি। রবিবারও হাসপাতালেই থেকে যাব। সোমবার যদি সব ঠিকঠাক হয়ে যায়, তবে ডাক্তার দেখিয়ে যেতে পারব। বারবার যাতায়াতের খরচও তো আছে।
মেডিসিনের মতো বিভাগে যেখানে বেড পেতে হিমশিম খেতে হত, এখন সেই বিভাগ একপ্রকার খাঁ খাঁ করছে। রুমেলা বিবি নামে এক প্রৌঢ়া রোগীকে ছুটি করিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, বউমা অসুস্থ। এখানে এক দু’বার চিকিৎসকরা আসছেন। কিন্তু আমরা ঠিক ভরসা পাচ্ছি না। এই অবস্থায় বউমাকে ফেলে রাখার কোনও মানে হয় না। ঘটিবাটি বিক্রি করে আগে ওর ভালো চিকিৎসা করাই। ডাক্তারদের পাশে আমরাও আছি। ওদের মার খাওয়া আমরাও সমর্থন করছি না। কিন্তু দিনের পর দিন এভাবে কাজ বন্ধ করে কী আন্দোলন হয়? আমরা কোথায় যাব?
এদিকে এরকম পরিস্থিতিতে শহরের নার্সিংহোমগুলিতে রোগীর ভিড় বাড়ছে। এমনকী গ্রামে গ্রামে হাতুড়ে চিকিৎসকদেরও কদর বেড়ে গিয়েছে। কবে এই অচলাবস্থা কাটবে, আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন সকলে।