বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে ওন্দা সহ জেলার কয়েকটি জায়গায় তৃণমূল নেতানেত্রীদের ঘরছাড়া হতে হয়। ওই সব নেতৃত্বের বিরুদ্ধে স্থানীয় গরিব মানুষের কাছ থেকে ‘বাংলার আবাস যোজনা’ প্রকল্পে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘরছাড়াদের মধ্যে এক জেলা পরিষদ সদস্যাও রয়েছেন। ফলে শুভেন্দুবাবুর এদিনের মন্তব্য যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। তৃণমূলের ঘুন ধরানো দুর্নীতিপরায়ণদের যে রেয়াত করা হবে না এদিন পরিবহণমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর্যালোচনা এবং আগামী দিনের রণকৌশল স্থির করতে এদিন রবীন্দ্র ভবনে তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার বৈঠক ডাকা হয়। পঞ্চায়েত প্রধান এবং অঞ্চল সভাপতি থেকে জেলা সভাপতি পর্যন্ত সর্বস্তরের নেতৃত্ব সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি যথাক্রমে শুভাশিস বটব্যাল, শ্যামল সাঁতরা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, মেন্টর অরূপ চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদিন শুভেন্দুবাবু ব্লক সভাপতিদের দাঁড় করিয়ে এলাকার খোঁজখবর নেন। কোথায় পার্টি অফিস বন্ধ রয়েছে, কোথায় দলের কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন এসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। পরে তিনি বলেন, বাঁকুড়ায় বর্তমানে তৃণমূলের সময় খারাপ যাচ্ছে। প্রতিদিনই এলাকার কর্মীরা স্যোশাল মিডিয়া, ফোন এবং মেসেজের মাধ্যমে নেতাদের পদ পরিবর্তন করার আবেদন আমাকে জানাচ্ছেন। তবে এখন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কারণ, ২০১১সালের পর ঘরে ঢুকে যাওয়া সিপিএমের হার্মাদরা বর্তমানে বিজেপি-র জামা গায়ে চাপিয়ে আমাদের উপর অত্যাচার করছে।
শুভেন্দুবাবু এদিন রীতিমতো আক্ষেপ করে বলেন, এতদিন এজেলায় উপর থেকে নেতারা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতেন। নীচেরতলার লোকদের কথা বলার সুযোগ ছিল না। ফলে যা হওয়ার হয়েছে। যেসব ব্লকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই, সেখানে ২০-২৫জনের কোর কমিটি গঠন করতে হবে। ব্লক সভাপতিকে মাথায় রেখে কমিটি করতে হবে। সহ সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদে কাউকে আপাতত রাখা হবে না। কমিটির সদস্যদের মাসে অন্তত দু’টি সভা করতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠের মত মান্যতা পাবে। সভার রেজ্যুলিউশন আমি প্রতি মাসে নিজে খতিয়ে দেখব। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কি না তা ব্লক সভাপতিকে কৈফিয়ত দিতে হবে। একইভাবে অঞ্চলেও কমিটি করে কাজ করতে হবে। জেলা সভাপতির নেতৃত্বে গঠিত কমিটিও মাসে দু’বার বৈঠক করবে। ব্লক সভাপতিদের আরও নমনীয় এবং উদার হতে হবে। আগামী ২১জুন থেকে ১৮জুলাই পর্যন্ত প্রতিটি ব্লকে জনসংযোগ যাত্রা করতে হবে। প্রতিটি গ্রাম, প্রতিটি বাজারে মিছিল করতে হবে।
শুভেন্দুবাবু আরও বলেন, জেলার প্রতিটি কলেজে ১০০জন টিএমসিপি-র ছাত্র নিয়ে ইউনিট তৈরি করতে হবে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভের ফলে সংগঠন করার তাগিদ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কার্যত নেই। এই পরিস্থিতির বদল আনতে হবে। তৃণমূলের প্রতীকে জেলা কোনও পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপি-র আনা প্রস্তাবে সই করলে তাঁর সদস্যপদ বাতিলের জন্য যথাস্থানে আবেদন করতে হবে। যেসব প্রধান দলের অঞ্চল অফিসে আসেন না তাঁদের তালিকা তৈরি করে আমাকে দিন। বাঁকুড়া শহরের হাল খুবই খারাপ। পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে লোকসভায় বিপর্যয় নেমে এসেছে। শহরের নেতানেত্রীদের নিয়ে আলাদা করে বৈঠক করতে হবে। এদিন বৈঠক শেষে শুভেন্দুবাবু বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেন।