কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
নওদা থানার পরেশনাথপুরের বাসিন্দা উজ্জ্বল পেশায় কৃষক। মঙ্গলবার চিকিৎসার জন্য ভর্তি হওয়ার ছ’ঘণ্টার মধ্যেই উজ্জ্বলবাবুকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে অন্যত্র নিয়ে যান পরিবারের লোকরা। ওই দিন রাত ১০টা নাগাদ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বাইরে দাঁড়িয়ে উজ্জ্বলের স্ত্রী বলেন, বিকেল ৪টা নাগাদ স্বামীকে এখানে ভর্তি করেছি। তিনতলার একটি ঘরে স্বামীকে ফেলে রাখা হলেও ডাক্তারের অভাবে তাঁর চিকিৎসা সেভাবে শুরু হয়নি। তার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। নিস্তেজ হয়ে পড়ছেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন তাঁদের এক আত্মীয় স্বপন মণ্ডল। তিনি বলেন, পারিবারিক অশান্তির জেরে উজ্জ্বল বিষ খেয়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে হাসসপাতাল অচল হয়ে পড়ায় উজ্জ্বলকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাচ্ছি।
শুধু উজ্জ্বল নন, বুধবার সকালে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে আরও কয়েকজন রোগীকে নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করেন পরিবারের লোকরা। ওই রোগীদের মধ্যে সুপ্রিয় সাহা নামে ন’বছরের এক শিশুও রয়েছে। ইসলামপুর থানার চক ইসলামপুরে তাদের বাড়ি। তার বাবা শুভ সরকার বলেন, কয়েকদিন ধরেই ছেলে জ্বরে আক্রান্ত। গত সোমবার ছেলেকে এখানে ভর্তি করেছি। মঙ্গলবার থেকে সেভাবে চিকিৎসা না হওয়ায় ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি। বাইরে শিশু বিশেষজ্ঞকে দেখাব। প্রয়োজন পড়লে নার্সিংহোমে ভর্তি করব। রঘুনাথগঞ্জের যুবক সাগর শেখকে এদিন হাসপাতাল থেকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সাগরের আত্মীয় তৈমুর শেখ বলেন, সোমবার বিদ্যুতের কাজ করতে দোতলার ছাদ থেকে পড়ে যায়। ওইদিনই সাগরকে এখানে ভর্তি করি। সেভাবে চিকিৎসা না হওয়ায় ওকে নিয়ে নার্সিংহোমে যাচ্ছি।
এদিন দুপুরে গলায় জলের বোতলের ছিপি আটকে যাওয়া এক শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। জানা গিয়েছে, চিকিৎসা পরিষেবা না মেলায় পরিবারের লোকজন ওই শিশুকে এখানে ভর্তি করেননি। ওই শিশুকে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সংসদ সদস্য তথা কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এব্যাপারে হাসপাতাল, পুলিস ও প্রশাসনের তরফ থেকে নির্দিষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে, এদিন জরুরি বিভাগের স্থান পরিবর্তন হওয়ায় হয়রান হন রোগীরা। উত্তরপাড়া থেকে আসা গর্ভবতী মহিলাকে নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েন পরিবারের লোকরা। তাঁরা জরুরি বিভাগের খোঁজে এদিকে-ওদিকে ছুটে বেড়ান। কয়েকজন সাংবাদিক ও পুলিসের সহযোগিতায় ওই গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি কয়েকজন রোগীও বলেন, সেভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না। নার্সিংহোমে যাওয়ার কথা ভাবছি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, জুনিয়র ডাক্তাররা নতুন জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান করছেন। তাই পুরনো জরুরি বিভাগ এদিন চালু করা হয়। সেখানে সর্বক্ষণ দু’জন চিকিৎসক ছিলেন। এছাড়া, ১১৫০বেড বিশিষ্ট এই হাসপাতালে এদিন ৮০জন চিকিৎসক চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করেছেন। হাসপাতালের সুপার ডাঃ দেবদাস সাহা বলেন, কয়েকটি অপারেশন হয়েছে। রোগী ভর্তি নেওয়াও হয়েছে। চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিকই ছিল। এদিন ২০জনের মতো রোগীর ছুটি হয়েছে।