বিএনএ, আসানসোল: বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে কাঁকসায় থানায় ধর্নায় বসেন এক পঞ্চায়েত সদস্যা ও তাঁর স্বামী। রবিবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত স্বপ্না বৈদ্য নামে ওই পঞ্চায়েত সদস্যা ও তাঁর স্বামী হ্যাপি বৈদ্য ধর্নায় বসেছিলেন। পরে ব্লকের নেতারা থানায় গিয়ে পুলিসের সঙ্গে কথা বলেন। অবশেষে পুলিসি নিরাপত্তায় তাঁদের ঘরে ফেরানো হয়। লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরনোর পর থেকেই কাঁকসা পঞ্চায়েতের ওই সদস্যা এবং তাঁর স্বামী এলাকা ছাড়া হয়ে যান। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিজেপি তাঁদের বাড়িতে একাধিকবার চড়াও হয় বলে অভিযোগ। যদিও গেরুয়া শিবিরের দাবি, তাঁরা এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভের শিকার হয়েছেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা হোক কিংবা নির্মল বাংলা সমস্ত প্রকল্পেই তাঁরা গরিব লোকজনদের কাছে থেকে টাকা নিয়েছেন। যদিও পঞ্চায়েত সদস্যা বা তাঁর স্বামী এই অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেছেন।
কাঁকসা থানার পুলিস জানিয়েছে, সোমবার দু’পক্ষকেই থানায় ডেকে পাঠানো হয়। দীর্ঘক্ষণ ধরে আলোচনা করা হয়। বিক্ষোভকারীদের আইন হাতে না তুলে না নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পুলিসি নিরাপত্তায় বাড়ি ফেরার পর ওই পঞ্চায়েত সদস্যাকে আর নতুন করে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠেনি। তাঁর বাড়ির সামনে নজরদারি চালানোর জন্য এক সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে।
স্বপ্নাদেবী থানায় দেওয়া অভিযোগপত্রে লিখেছেন, এলাকার কয়েকজন বারবার আমাদের বাড়িতে চড়াও হচ্ছে। বেশ কয়েকবার ভাঙচুরও চালিয়েছে। ফোনে হুমকি দিয়ে বলা হয় এলাকায় থাকতে হলে ৩ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তা না হলে মারধর ও ভাঙচুর চলবে। স্বপ্নাদেবীর স্বামী হ্যাপিবাবু বলেন, একাধিকবার ফোন করে টাকা চাওয়া হয়েছে। তবে পুলিস সোমবার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার পর আর নতুন করে কোনও হুমকি ফোন আসেনি।
বিজেপি নেতা রমন শর্মা বলেন, এলাকায় তো আরও অনেক তৃণমূল নেতা রয়েছেন। কেউ বাড়ি ছাড়া হয়নি। নিশ্চই কোনও কারণ আছে বলেই ওরা বারবার ক্ষোভের মুখে পড়ছে। এলাকায় গরিব লোকজনদের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়েছে। ১০০ দিনের প্রকল্পেও টাকা আত্মসাৎ করেছে। এখন তো তারা টাকা ফেরত চাইবেই। বিজেপি সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকে। এক্ষেত্রেও আমজনতার পাশে রয়েছে। তৃণমূল নেতা দেবদাস বক্সি বলেন, বিজেপি বিভিন্ন জায়গাতেই গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু এসব করে কোনও লাভ নেই।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পর তৃণমূলের নেতারা গোষ্ঠী কোন্দল ভুলে একজোট হয়ে রবিবার রাতে থানায় যান। দলের নিচুতলার কর্মী এবং সমর্থকরা তাতে খুশি। তাঁদের দাবি, এই ব্লকে সব গোষ্ঠীর নেতারা একজোট হয়ে ময়দানে নামলে সংগঠন ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় লাগবে না। তৃণমূল নেতা পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কাঁকসায় আমাদের সংগঠন যথেষ্টই মজবুত রয়েছে। আরও ভালো সংগঠন করার জন্য সব রকমভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি।
অন্যদিকে, বিজেপি জামুড়িয়ায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে জলের সংযোগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। তাদের দাবি, ভূত বাংলো এলাকায় কয়েকদিন আগে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বিজয় মিছিল করেছিল। তারপরেই জলের সংযোগ কেটে দেওয়া হয়। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগ মানতে চায়নি। আসানসোল পুরসভার জল দপ্তরের মেয়র পরিষদ সদস্য পূর্ণশশী রায় বলেন, এই অভিযোগ ঠিক নয়। তবে কোথাও অবৈধ সংযোগ থাকলে তা নিয়ে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।