কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা বলছেন, এই ঘটনা বুঝিয়ে দিল, ইচ্ছা থাকলে সবটাই সম্ভব। এছাড়াও জেলার ১১টি বিভিন্ন স্তরের হাসপাতাল পুরস্কার পেতে চলেছে।
‘সুশ্রী’ প্রকল্পে একটি বিভাগে প্রথম হয়েছে ওই দুই হাসপাতাল। তিন বছর ধরে চলছে এই প্রকল্প। কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পের নাম দিয়েছে ‘কায়াকল্প’। রাজ্যে তারই নাম দিয়েছে ‘সুশ্রী। মোট ৬টি বিষয়ের উপরে ৫০০নম্বরের পরীক্ষা চালানো হয় হাসপাতালের উপর। তিনটি স্তরে পরীক্ষা হয়। এরপর প্রাপ্ত নম্বরের উপরেই সেরা হাসপাতাল ঠিক হয়। তবে যারা পাশ নম্বর পায়, তাদেরও পুরস্কৃত করা হয়।
মূলত হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, পরিষেবা, বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার উপর কে কতটা জোর দিয়েছে, বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো করা, রোগ জীবাণু মোকাবিলায় উন্নত ব্যবস্থা রাখা, শৌচালয় কতটা পরিষ্কার এরকম একাধিক বিষয় লক্ষ্য রাখা হয়। এরপর প্রথমে জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা, দ্বিতীয় ধাপে অন্য জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা এবং শেষ ধাপে রাজ্যের একটি প্রতিনিধি দল(যেখানে ন্যাশনাল হেলথ মিশনের প্রতিনিধিরাও থাকেন) তাঁরাই নম্বর দেন। ৫০০ নম্বরের মধ্যে দু’টি হাসপাতালই ৪৭১ নম্বর করে পেয়েছে।
প্রকল্পের নোডাল অফিসার তথা জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গি বলেন, বিদ্যাসাগর গ্রামীণ হাসপাতাল রাজ্যে প্রথম হয়েছে। অফিসের সমস্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মীর পরিশ্রমকে আমরা কুর্নিশ জানাচ্ছি। অনেক বড় বড় হাসপাতালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ওই প্রত্যন্ত এলাকার একটি হাসপাতাল প্রথম হয়েছে, সেটা ভাবা যায় না।
ঘাটাল ব্লকের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক মনোজিৎ বিশ্বাস বলেন, তিন বছর আগে এই প্রকল্প শুরু হয়। মানুষের সরকারি হাসপাতালের উপর যে বিতৃষ্ণা সেই ধারণা এর মাধ্যমে বদলানো গিয়েছে। রোগীরা যাতে সরকারি হাসপাতালে কোয়ালিটি সার্ভিস পান, সেই জন্যই রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ। ৯৪.২ শতাংশ নম্বর আমরা পেয়েছি। আমাদের কাছে এটা খুবই আনন্দের খবর। অন্যান্য গ্রামীণ হাসপাতাল, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমরা প্রথম হয়েছি। খুবই ভালো লাগছে। এই পুরস্কার হাসপাতালকে আরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং হাসপাতালের রোগীর পরিষেবাকে বাড়িয়ে তুলতে আরও উৎসাহিত করবে।
৩০শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতাল সরকারি হাসপাতালের থেকে অনেকটাই আলাদা। পর্যাপ্ত আলো, ফুল, ফল, ভেষজ বাগানে সৌন্দর্যায়িত হাসপাতাল চত্বর। হাসপাতালের ভিতরটিও অত্যন্ত সুন্দর। শৌচালয়, ওয়ার্ড সব কিছুই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। হাসপাতালে ঢুকলেই যে পরিচিত দুর্গন্ধ পাওয়া যায়, এখানে তার বিন্দুমাত্র নেই। এই প্রকল্পে অংশগ্রহণের জন্য জেলা থেকেই নাম পাঠানো হয়। এরপর ছ’টি মাপকাঠিতে মূল্যায়ণ হয়। একটি ক্যাটাগরিতে গ্রামীণ হাসপাতাল, ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্টেট জেনারেল হাসপাতাল, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল রয়েছে। ওই ক্যাটাগরিতে ওই দুই হাসপাতাল যুগ্মভাবে প্রথম হয়েছে। ৭জুন এই পুরস্কারের কথা ঘোঘণা করা হয়েছে।
বীরসিংহ গ্রামের বাসিন্দা প্রকাশ ঘোষ বলেন, বিগত কয়েক বছর হল প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাল অনেকটাই বদলেছে। আগে যেখানে জ্বর বা পেটের অসুখের চিকিৎসার জন্য আমাদের বীরসিংহ থেকে ঘাটাল যেতে হতো সেটা এখন আর হয় না। সেই সঙ্গে বদলেছে হাসপাতালের ভিতরের পরিবেশ। হাসপাতালের মধ্যে এলেই যেন রোগীদের মন বদলে যায়। চারিদিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। দুর্গন্ধ বিন্দুমাত্র নেই। ফুলের বাগানও রয়েছে।