বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রে প্রায় ২ লক্ষেরও বেশি ভোটে তৃণমূল প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাত পরাজিত হন। একই সঙ্গে তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাত সহ অধিকাংশ বিধায়ক নিজের এলাকাতেও তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে। শুধুমাত্র মানবাজারের বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডুর এলাকায় তৃণমূল প্রার্থী জয়ী হন। রঘুনাথপুর ও বান্দোয়ান বিধানসভা এলাকাতেও তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে। তারপরেই শনিবার বিকেলে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের দিকে নজর ছিল জেলা তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের। জঙ্গলমহল সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ভোটে বিপর্যয়ের জন্য জেলা সভাপতির পরিবর্তন করা হলেও পুরুলিয়ার বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠকে কোনও কথা না বলায় কার্যত আপাতত স্বস্তি পায় জেলা তৃণমূলের নেতারা। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শান্তিরাম মাহাতর উপর তৃণমূল সুপ্রিমোর ভরসা অটুট রয়েছে না কি অন্য কোনও কারণে সভাপতি পরিবর্তন করা হয়নি তা নিয়ে জেলা তৃণমূলের অন্দরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
জেলা তৃণমূলের একাংশের দাবি, শান্তিরামবাবুর মতো পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ এবং দীর্ঘদিন ধরে বিধায়ক থাকা ব্যক্তিকে সরিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে জেলা তৃণমূলের পদ সামলানোর পাশাপাশি ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যোগ্য বিকল্প না থাকাতেই জেলা সভাপতি পদে এযাত্রায় টিকে গেলেন শান্তিরামবাবু।
জেলা তৃণমূল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনে মানবাজার ছাড়া পুরুলিয়া জেলার অন্যান্য কেন্দ্রের বিধায়করা নিজের এলাকায় বিজেপির থেকে পিছিয়ে। তাই বিধায়কদের মধ্যে থেকে কাউকে জেলা সভাপতির মতো গুরুদায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ভাবতে হচ্ছে দলকে। অন্যদিকে, বিধায়ক ছাড়াও জেলা সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় পাড়া বিধানসভা এলাকার দায়িত্বে, জেলা যুব সভাপতি সুশান্ত মাহাত বাঘমুণ্ডি বিধানসভা এলাকার দায়িত্বে এবং জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক নব্যেন্দু মাহালি জয়পুর বিধানসভা এলাকার নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থেকেও দলকে ওই এলাকায় জয়ের স্বাদ দিতে পারেননি। একই সঙ্গে পুরুলিয়া শহর, রঘুনাথপুর শহর এবং ঝালদা শহরের নেতারাও কার্যত ব্যর্থ। স্বভাবতই শান্তিরামবাবুকে সরিয়ে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে বিড়ম্বনায় পড়েছে দল।
জেলা তৃণমূলের একাংশের দাবি, ভোটে বিপর্যয়ের পরেও তৃণমূল সুপ্রিমো শান্তিরামবাবুর উপরেই ভরসা রেখেছেন পুরুলিয়ায় দলকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য। এবিষয়ে তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে প্রাক্তন এমপি তথা তৃণমূলের পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের পরাজিত প্রার্থী মৃগাঙ্ক মাহাত বলেন, শনিবারের বৈঠকে তৃণমূল সুপ্রিমো পুরুলিয়া জেলার দলের সভাপতি হওয়ার জন্য আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে আমি এখনই এরকম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারব না বলে তৃণমূল নেত্রীকে জানিয়েছি। জঙ্গলমহল এলাকার জন্য দিদি দলের পক্ষ থেকে নতুন পর্যবেক্ষক হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়োগ করেছেন। দল পরিচালনার ক্ষেত্রে পরবর্তী সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন।