বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরই রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো মুর্শিদাবাদ জেলাতেও দলে রদবদল করেছে তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতির পদ থেকে সুব্রত সাহাকে সরিয়ে সেই পদের দায়িত্ব মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের নবনির্বাচিত সদস্য তাহেরসাহেবকে দেওয়া হয়েছে। এদিন কলকাতা থেকে ফিরে বহরমপুর শহরে দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা এবং দলীয় ভিতকে চাঙ্গা করার কথা বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বহরমপুর শহরে তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি, সহ সভাপতি, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, প্রাক্তন সংসদ সদস্য, পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান, দলের টাউন সভাপতি, মহকুমা সভাপতি, ছাত্র সংগঠনের জেলা সভাপতি, মহিলা সংগঠনের নেত্রী, বেশ কয়েকজন শিক্ষাবিদ, সমাজসেবী বসবাস করেন। তা সত্ত্বেও এবার লোকসভা ভোট এই শহরেই তৃণমূলের শোচনীয় ফল হয়েছে। ২৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে সবক’টিতেই তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে। বিশাল ভোটে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। আর ১৩-১৪টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিজেপি।
এদিন এব্যাপারে দলের নতুন জেলা সভাপতি বলেন, জেলার ২২টি বিধানসভা মধ্যে অধিকাংশেই আমাদের ফলাফল ভালো হয়েছে। শুধু বহরমপুর শহরে খারপ ফল হয়েছে। আমাদের মধ্যে ত্রুটি ছিল বলেই এমন ফল হয়েছে। তাই সাধারণ মানুষের কাছে আরও বেশি করে আমরা যাব। মাথা নিচু করে মানুষের কাছে গিয়ে দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করব। মানুষের আশা, প্রত্যাশা পূরণ করার মধ্য দিয়েই এই শহরে আমরা ঘুরে দাঁড়াব। কারণ আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নের সঙ্গে আছেন। তাঁর নির্দেশ মতো এবং দলের জেলা পর্যাবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর পরামর্শমতো শহরে জনসংযোগ বাড়ানোয় জোর দেব। আগামী পুরনির্বাচনেই এই শহরে আমরা ঘুরে দাঁড়াব বলে আশা করছি। সেই নির্বাচনে আপনারা আমাদের ফলাফল দেখে নেবেন।
এদিন দলের গোষ্ঠী কোন্দল মেটানো, পদ আঁকড়ে থাকা নেতাদের সরানো এবং ব্লক, অঞ্চল সহ বিভিন্ন স্তরের দলীয় কমিটিতে রদবদল করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তাহেরসাহেব। তিনি বলেন, আগামীতে এই জেলার ২২টি বিধানসভা কেন্দ্রই আমরা দখল করতে চাই। সেজন্য গোষ্ঠীকোন্দল মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দল চালাব। তাছাড়া, যাঁরা দলের পদ আকড়ে বসে থাকা নেতাদের সরিয়ে নতুন প্রজন্মকে দলের সামনের সারিতে আনা হবে। লোকসভা ভোটের পারফরমেন্স বিচার করেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে কাউকে অসম্মান করা হবে না। পাশাপাশি, লোকসভা ভোটের বুথভিত্তিক ফলাফল নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। যাঁরা ভোটের ময়দানে নিষ্ক্রিয় ছিলেন, দলের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে দলের রাজ্য কমিটি ও জেলা পর্যবেক্ষকের কাছে রিপোর্ট করব। তাঁরা যা নির্দেশ দেবেন সেইমতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, একদা, দলের একাংশ নেতাদের বিরুদ্ধে ফোন না ধরা, বাড়িতে বসে কিংবা হোটেলে বসে দল চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। তাহেরসাহেব বলেন, আমি দলের সর্বক্ষণের কর্মী। চেয়ারে বসে রাজনীতি করি না। চেয়ার ছেড়ে দিয়ে ময়দানে নেমে রাজনীতি করি। তাই বাড়ি পার্টি অফিস করব না। পার্টি অফিসেই দলের কাজ করব। জেলার কোথাও দলের কোনও কর্মীর, সমস্যা হলে ছুটে যাব। সংসদ সদস্যের দায়িত্ব এবং দলীয় জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলাতে সমস্যা হবে না। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অধীর চৌধুরী কংগ্রেস করেন। নিজের স্টাইলে দল চালান। একসময় তাঁর সঙ্গে ছিলাম। আমরা তাঁর দল চালানোর স্টাইল জানি। এবার আমরা আমাদের স্টাইলে দল চালাব। রাজনৈতিকভাবেই তাঁকে পরাস্ত করব। এজন্য পেশিশক্তির প্রয়োজন হবে না। তাছাড়া, জেলার মাটিতে একটি সাম্প্রদায়িক শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় দাঙ্গা লাগাবার চেষ্টা করছে। এব্যাপারে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলেছি।