কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
অনুব্রত মণ্ডল ও দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি মানুষকেও প্রণাম জানিয়েছেন বোলপুরের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী। তবে পাঁচবারের বিধায়ক অসিতবাবু ভোটারদের সঙ্গে ভেদাভেদ করতে নারাজ। তিনি বলেন, দলের অনুমতি নিয়ে সকলের কাছে যাব। সবাইকে নিয়ে চলব। আমি সংসারী নই। আমার কোনও পিছুটানও নেই। তাই বোলপুরে দল যেখানে আমার থাকার ব্যবস্থা করে দেবে সেখানেই এই পাঁচটা বছর পড়ে থেকে মানুষের সেবা করব। এলাকার উন্নয়নে কোনও খামতি রাখব না।
গতবারের এই লোকসভায় তৃণমূলের টিকিটে জিতে এমপি হয়েছিলেন অনুপম হাজরা। তাঁকে এলাকায় দেখা যায়নি, শেষে দলের সঙ্গে বিবাদ করে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। সেই জায়গায় এবার টিকিট পেয়ে জয়ী হয়েছেন অসিতবাবু। শনিবার এক সাক্ষাৎকারে প্রবীণ রাজনীতিক অসিতবাবু বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই দু’টি পথেই তিনি হাঁটবেন।
বোলপুরে তৃণমূলের সেই একচ্ছত্র দাপট আর নেই। মানুষ সুযোগ পেতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে জমে থাকা ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। তাই ফের সংগঠনকে আগের জায়গায় নিয়ে যেতে এবং মানুষকে কাছে পেতে দলের পাশাপাশি তাঁকে যে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হবে তা বুঝতে পারছেন পাঁচবারের এই বিধায়ক।
ময়ূরেশ্বর, বোলপুর, লাভপুর, নানুর— জেলার এই চার বিধানসভা কেন্দ্র ও পূর্ব বর্ধমানের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্র আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম নিয়ে গড়ে উঠেছে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রটি। একটা সময়ে এই এলাকার বেশিরভাগ লোক সিপিএমের কাস্তে হাতুড়ি তারা ছাড়া কিছু চিনত না। ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে এলাকার এমপি হতেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, পরে রামচন্দ্র ডোম। কিন্তু, এই ভোটে সেই বামেরা মাত্র ছ’ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়ে লড়াই থেকে অনেক দূরে ছিটকে গিয়েছে।
অন্যদিকে, কার্যত এলাকায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা তৃণমূল স্বস্তিতে নেই, কারণ মোদি ঝড়। তৃণমূলের এই দুর্গে হানা দিয়ে তারা ৪০.৫৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে। গতবারের থেকে প্রায় ৩২ শতাংশ বেশি। তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে তারা। ময়ূরেশ্বর বিধানসভায় লিড পেয়েছে বিজেপি। লাভপুর, নানুর ও বোলপুরে বিধানসভাতেও কড়া টক্কর দিয়েছে বিজেপি। এই অবস্থায় কীভাবে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য কাজ করবেন তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে।
নির্বাচনী প্রচার কাণ্ডে প্রায় প্রতিটি বড় গ্রাম ও শহরের ওয়ার্ড চষে বেড়িয়েছেন অসিতবাবু। তা বজায় রাখতে চান জেতার পরেও। তিনি বলেন, এক মুহূর্তের জন্যও তাঁদের থেকে দূরে থাকতে চাই না। নির্বাচনের সময় প্রায় প্রতিটি বড় গ্রামে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। সেখানে মানুষের ভালোবাসা, আবেগ দেখে আমি আপ্লুত। ফল বিভিন্নরকম হতেই পারে। কোনও এলাকার মানুষ আমাকে ভোট কম দিতেই পারেন। কিন্তু, আমি মনে করি, মানুষকে সাময়িক ভুল বোঝানো যেতে পারে। কিন্তু দীর্ঘদিন উন্নয়নের বিমুখ রাখা যাবে না। তাই সবার সঙ্গে থাকতে চাই। অন্যদিকে, তিনি দলীয় আনুগত্যকে এগিয়ে রেখেছেন।
তিনি বলেন, দল যা নির্দেশ দেবে সেই অনুযায়ী কাজ করব। কোনও খামতি রাখব না। দল যেখানে আমার জন্য থাকার ব্যবস্থা করবে সেখানেই থাকব। যাতে মানুষ মনে না করেন, আমি ভোট নিয়ে চলে গিয়েছি। ওঁরাই আমার পরিবার, ওঁদের সঙ্গে থেকেই আনন্দ পাব।