পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা থেকে বিজেপি ১ লক্ষ ৯১৫৩ ভোট পেয়েছে। আর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মমতাজ সঙ্ঘমিতা পেয়েছেন মাত্র ৫৯ হাজার ৬৪২ভোট। সিপিএম ওই আসনে ২২ হাজার ১১টি ভোট পেয়েছে। বিজেপি প্রার্থী এসএস আলুওয়ালিয়া ওই বিধানসভা থেকে ৪৯ হাজার ৫১১ ভোটর লিড পান। দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৯০ হাজার ৪৫৫ভোট। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট ৬৩ হাজার ৮৬৪ভোট। ওই বিধানসভা এলাকা থেকে বিজেপি-র লিড ২৬ হাজার ৫৯১ ভোট। ওই বিধানসভা এলাকায় সিপিএম প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ২৮ হাজার ২৯৭ ভোট।
দুর্গাপুর পুরসভার ৪৩টি ওয়ার্ড এবং কাঁকসার দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে গঠিত দুর্গাপুর পূর্ব ও দুর্গাপুর পশ্চিম আসন। কাঁকসার দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত দুর্গাপুর পূর্ব কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। ২০১৮ সালে দুর্গাপুর পুরসভায় বিরোধীহীন বোর্ড গঠন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ৪৩টি ওয়ার্ডেই তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলার। অথচ লোকসভা ভোটে সেই দুর্গাপুর পুরসভায় মুখ থুবড়ে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২, ১২ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়া কোনও ওয়ার্ড থেকে লিড নিতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। গত বছর পুরসভা ভোটে ১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস ১১ হাজার ভোটের লিড পেয়েছিল। আর লোকসভা নির্বাচনে সেই ওয়ার্ডে তৃণমূল পিছিয়ে পড়েছে ২৩১৯ ভোটে।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ২০১৮ সালে বিরোধীহীন পুরবোর্ড গড়তে গিয়ে এবার লোকসভা ভোটে তারই খেসারত দিতে হল তৃণমূল কংগ্রেসকে। তৃণমূল কংগ্রেসের কাছ থেকে কার্যত মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দুর্গাপুর পূর্ব ও দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটাররা। তাছাড়া দুর্গাপুর পুরসভার বেশকিছু কাউন্সিলারের ভূমিকা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সবমিলিয়ে লোকসভা ভোটে দুর্গাপুরে দু’টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপর্যয় নেমে এসেছে।
বৃহস্পতিবার বর্ধমানে ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে ফাইনাল রাউন্ড শেষ হতে দেখা যায়, বিজেপি প্রার্থী এসএস আলুওয়ালিয়া ৫ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩৭৬ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মমতাজ সঙ্ঘমিতা ৫ লক্ষ ৯৫ হাজার ৯৩৭ ভোট পেয়েছেন। ব্যবধান মাত্র ২৪৩৯। পুনর্গণনার দাবিতে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ সহ অন্যান্য নেতারা রাতেই গণনা কেন্দ্রের বাইরে রাস্তায় ধর্নায় বসে পড়েন। কিন্তু, সেই আর্জি খারিজ করে দেয় কমিশন। হতাশ ও বিধ্বস্ত তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা শুধুই দুর্গাপুর পূর্ব ও দুর্গাপুর পশ্চিম আসনে বিপুল ঘাটতি নিয়ে হা-হুতাশ করছিলেন। দুর্গাপুরের নেতারাই এই আসনে পরাজয়ের জন্য দায়ী বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করছিলেন।
বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস বর্ধমান দক্ষিণ থেকে ১৩৩৮ ভোট, মন্তেশ্বর থেকে ২৭ হাজার ৪৩০ ভোট, বর্ধমান উত্তর বিধানসভা থেকে ২৮ হাজার ৪৬ ভোট এবং ভাতার বিধানসভা থেকে ২৬ হাজার ৪৬৪ ভোটের লিড পায়। যদিও গলসি বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস ৯৬২১ ভোটে পিছিয়ে। বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভায় তৃণমূল ৮৫ হাজার ৩০১ ভোট পেয়েছে। ওই বিধানসভায় বিজেপি পেয়েছে ৮৩ হাজার ৯৬৩ ভোট। মন্তেশ্বর বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ৯৫ হাজার ২০২ ভোট। ওই বিধানসভায় বিজেপি পেয়েছে ৬৭ হাজার ১৬৬ ভোট। বর্ধমান উত্তরে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ১ লক্ষ ৮৬৬৩ ভোট। ওই বিধানসভায় বিজেপি পেয়েছে ৮০ হাজার ৬১৭ ভোট। ভাতারে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮৩ ভোট। ওই বিধানসভায় বিজেপি পেয়েছে ৭২ হাজার ৯১৯ ভোট। গলসিতে তৃণমূল পেয়েছে ৮৩ হাজার ৫৫৬ ভোট। ওই কেন্দ্রে বিজেপি পেয়েছে ৯৩ হাজার ১৭৭ ভোট। পূর্ব বর্ধমানের চারটি বিধানসভা থেকে ৮৩ হাজার ২৭৮ ভোটের লিড থাকা সত্ত্বেও গলসি এবং দুর্গাপুর পূর্ব ও দুর্গাপুর পশ্চিম আসনে বিপুল ঘাটতি তীরে এসে তরি ডুবল তৃণমূলের।