বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
দিনের শুরুতে কিন্তু ব্যবধান যে এতটা হবে, তা কল্পনাই করেননি কেউ। দিলীপ ঘোষ প্রথম রাউন্ড থেকে এগিয়ে গেলেও ব্যবধান ছিল মেরেকেটে ৩ হাজার। সকাল ১১টায় মাত্র ২৫৩ ভোটে এগিয়ে ছিলেন দিলীপ ঘোষ। যদিও আধ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় ৬০২৯। খেলা পাল্টে যায় বেলা ১২টা নাগাদ। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেই ফুটে ওঠে ১০৭৯ ভোটে এগিয়ে গিয়েছেন মানস ভুঁইয়া। কিন্তু এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার ৭৮৯ ভোটে এগিয়ে যান দিলীপবাবু। মিডিয়া সেলের স্ক্রিনে যখন এই ট্রেন্ড ফুটে উঠছে, তখন নার্ভ ধরে রাখতে পারছেন না রাজনৈতিক দলের নেতা থেকে শুরু করে সরকারি কর্মীরাও। টান টান উত্তেজনা! ১২টা ১১ মিনিটে ফের দিলীপবাবুকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যান মানস ভুঁইয়া। মেদিনীপুর কেন্দ্র ৬০৪ ভোটে এগিয়ে যান তিনি। ১২টা ৪৭ মিনিটেও ট্রেন্ডে দেখা যায়, ৩৪৮৩টি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন মানস ভুঁইয়া। ১২টা ৪৯মিনিটে তা পৌঁছায় ৬৬৪৫ ভোটে। এরপর দেড়টা নাগাদ দিলীপ ঘোষ আবার এগতে শুরু করেন। ৫০৫১ ভোটে এগিয়ে থাকেন দিলীপবাবু। এরপর ১২ হাজার, ২৩ হাজার, ৩০ হাজার করে দুপুর ২টোর পর থেকেই মার্জিন ক্রমেই বাড়তে থাকে দিলীপবাবুর। বিকেল ৪টেয় দেখা যায় ৫০ হাজার ব্যবধান বাড়িয়ে ফেলেছেন দিলীপবাবু। বিজেপি সমর্থকরা আড়ালে আবডালে মানছেন, এতটা ব্যবধান তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি। এখানেই থামেননি দিলীপবাবু। দিনের শেষে পোস্টাল ব্যালটের ভোট যুক্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত দিলীপবাবু ৮৭ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন।
এই মেদিনীপুরেই গতবার ১ লক্ষ ৮৫হাজার ভোটে জয়লাভ করেছিল তৃণমূল। সেখানেই তাদের এমন ভরাডুবি হল। তবে প্রত্যাশা মতোই একেবারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সাক্ষী রইল মেদিনীপুর কেন্দ্রে।
এগরা, মেদিনীপুর সদর, নারায়ণগড়, কেশিয়াড়ি, দাঁতন, সবকটি বিধানসভা শাসকদলের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। এই ফল প্রত্যাশার অনেকটাই বাইরে ছিল মানসবাবুর। গণনা কেন্দ্রের নির্ধারিত বসার ঘরে অনেক সময়ই বিচলিত অবস্থায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। ফোন করে বিভিন্ন এলাকার নেতা, বিধায়কদের জিজ্ঞাসা করেছেন, কী হল এটা! কিছুটা ভেঙেও পড়েন তিনি। তবে যতটা সম্ভব শক্ত থাকার চেষ্টা করেছেন। একের পর এক ফোন ঘুরিয়ে গিয়েছেন। কেউ ফোন না ধরলে চরম বিরক্ত হয়েছেন। বারবার কর্মীদের বুথভিত্তিক ফলাফল জোগাড় করতে বলেছেন। সংক্ষেপে বলেছেন, ফলাফল সম্পূর্ণ বের হোক। পর্যালোচনা করার পরেই যা বলার বলতে পারব। তবে এইটুকু বলতে পারি, বামেদের সব ভোট বিজেপিতে পড়েছে।
এদিকে তাঁর থেকে দু’হাত দূরে বসা দিলীপবাবুর হাসি চওড়া হয়েছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। মাঝে দু’জনকে সৌজন্য বিনিময় করতেও দেখা গিয়েছে। দিলীপবাবু বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অহঙ্কারের জন্যই এই ফল হয়েছে। ডান বাম নয়, অত্যাচারিত হয়ে মানুষ জায়গায় জায়গায় আমাদের জিতিয়েছেন।