বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
বাঁকুড়া জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পঙ্কজ সরকার বলেন, এবার জেলার ছাত্রছাত্রীরা ভালো ফল করেছে। মেধা তালিকায় স্থান পাওয়ার ক্ষেত্রে বাঁকুড়ার পরীক্ষার্থীরা আশেপাশের জেলাকে টেক্কা দিয়েছে। প্রতিবছরই জেলায় ভালো ফল হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা আনার জন্য মঙ্গলবার জেলা শিক্ষা দপ্তরের প্রতিনিধিকে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। আজ, বুধবার আমরা কৃতীদের বাড়িতে তা পৌঁছে দেব।
জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার বাঁকুড়ায় মোট ৫১ হাজার ২২ জন মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেছিল। এদিন ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, জেলার মোট পাঁচ পরীক্ষার্থী ৬৮৩ নম্বর পেয়ে অষ্টম স্থান দখল করে। ওই নম্বরই জেলার সর্বাধিক। বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুলের অর্কপ্রভ সাহানা এবং কৌশিক সাঁতরা অষ্টম স্থানে জায়গা করে নেয়। বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাই স্কুলের সুদীপ্তা ধবল, জেলা স্কুলের সায়ন্তন দত্ত এবং রামহরিপুর রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলের প্রীতিশ কর্মকারও অষ্টম স্থান দখল করে। বাঁকুড়া জেলা স্কুলের সৌগত পাণ্ডা এবং রামহরিপুর রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলের শুভদীপ কুণ্ডু ৬৮২ নম্বর পেয়ে জেলায় যুগ্মভাবে নবম স্থান পেয়েছে। জয়রামবাটি রামকৃষ্ণ মিশন সারদা বিদ্যাপীঠের সৌধ হাজরা, মিশন গার্লস হাইস্কুলের শাখী কুণ্ডু এবং বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুলের রিমা চৌধুরী ৬৮১ নম্বর পেয়ে দশম স্থান দখল করেছে।
গত কয়েকবছর ধরেই বাঁকুড়ার ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিকে নজরকাড়া সাফল্য পাচ্ছে। ২০১৭ সালে প্রথম স্থান সহ মেধাতালিকায় বাঁকুড়া থেকে মোট ১৭ জন জায়গা করে নেয়। ২০১৮ সালেও বাঁকুড়া থেকে ১০ জন মেধা তালিকায় ঠাঁই পেয়েছিল। প্রথম দশের মধ্যে পঞ্চম স্থানে দু’জন, ষষ্ঠ স্থানে একজন, অষ্টম স্থানে চার জন, নবম স্থানে একজন এবং দশম স্থানে দু’জন স্থান পায়। সাফল্যের সুনাম বজায় রেখে এবারও বাঁকুড়া থেকে ১০ জন প্রথম দশে জায়গা করেছে। তবে, মেধা তালিকায় সাফল্যের ধারা বজায় থাকলেও সামগ্রিক ফলাফল ততটা আশানুরূপ হয়নি। রাজ্যে যেখানে গড় পাশের হার শতকরা ৮৬.০৭ শতাংশ, সেখানে বাঁকুড়ায় সামগ্রিক পাশের হার ৭৭.৭০ শতাংশ। তারমধ্যে ছাত্র এবং ছাত্রীদের পাশের হার যথাক্রমে ৮৫.৯৮ এবং ৭০.৮৯ শতাংশ। ফলে রাজ্যের তুলনায় এই জেলায় পাশের হার প্রায় ১০ শতাংশ কম হয়েছে। ২০১৮ সালে এই জেলায় সামগ্রিক পাশের হার ছিল শতকরা ৭৯.৫৯ শতাংশ। সেবার ছাত্র এবং ছাত্রীদের পাশের হার ছিল যথাক্রমে ৮৮.৫৭ এবং ৭৭.৮০ শতাংশ। শহরাঞ্চলের স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীরা ভালো ফল করলেও গ্রামের বিদ্যালয়গুলিতে পঠনপাঠনের মান ক্রমশ নিম্নমুখী হচ্ছে বলে শিক্ষামহলের অভিমত। অবশ্য, প্রাইভেট টিউশনির জন্য শহরের ছাত্রছাত্রীরা ভালো ফল করে বলে শিক্ষাবিদদের দাবি। তবে জেলার সামগ্রিক পাশের হার কমে যাওয়ায় শিক্ষানুরাগীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি গৌতম দাস বলেন, বাঁকুড়ার ছাত্রছাত্রীরা মেধা তালিকায় জায়গা করে নেওয়া রীতিমতো অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে। এটা একটা ভালো দিক। তবে সামগ্রিক ফলাফল নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। ছাত্রছাত্রীদের প্রতি শিক্ষকদের আরও বেশি করে মনোযোগ দিতে হবে। এবিটিএর বাঁকুড়া জেলা সহ সম্পাদক আশিস পাণ্ডে বলেন, ভালো ফল করার জন্য ছাত্রছাত্রীদের শুভেচ্ছা জানাই। দুর্বলতাগুলি আমরা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করব।