পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
শুভদীপ ঝাড়গ্রাম ব্লকের বাঁধগোড়া অঞ্চল হাইস্কুলের ছাত্র। পঞ্চম শ্রেণি থেকেই সে ওই স্কুলে পড়াশুনা করেছে। এদিন টিভি দেখে শুভদীপ জানতে পারে, সে রাজ্যের মধ্যে দশম হয়েছে। শুভদীপ বাংলায় ৯৬, ইংরেজিতে ৯১, অঙ্কে ৯৯, ভৌত বিজ্ঞানে ১০০, জীবন বিজ্ঞানে ৯৯, ইতিহাসে ৯৯ ও ভূগোলে ৯৭ নম্বর পেয়েছে। শুভদীপ দশম হওয়ায় গ্রামজুড়ে খুশির হাওয়া বইছে। মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরই গ্রামের লোকজন মাইক বাজিয়ে আনন্দ করছে।
গ্রামের মধ্যে টিনের ছাউনি দেওয়া ইটের গাঁথনির দোতলা বাড়ি শুভদীপদের। তার বাবা নিত্যানন্দ মাজি চাষবাস করেন। পাশপাশি বাড়িতে ভূষিমালের দোকান রয়েছে। শুভদীপের মা কৃষ্ণা মাজি গৃহবধূ। পড়াশুনার পাশাপাশি শুভদীপ মাঝেমধ্যেই দোকান সামলায়। ঝাড়গ্রাম শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরের ওই এলাকায় হাতির উপদ্রব রয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় গৃহশিক্ষক তেমন নেই। তাই শুভদীপ বাবার সঙ্গে ঝাড়গ্রাম শহরে প্রাইভেট টিউশনি পড়তে যেত। পাঁচজন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশুনা করেছে সে। তার বাবা স্নাতক, মা মাধ্যমিক পাশ। শুভদীপের ছোট ভাই সাগ্নিক বাঁধগোড়া অঞ্চল হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। অবসর সময়ে শুভদীপ ছবি আঁকে। এছাড়াও গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেটও খেলে। রাজনীতি নিয়ে তার তেমন আগ্রহ নেই। শুভদীপ বলে, সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা করব। আগামীদিনে চিকিৎসক হতে চাই। পড়াশুনার ক্ষেত্রে স্কুলের শিক্ষকরা সব সময় সাহায্য করতেন।
এদিন ফল প্রকাশের পর স্কুলের শিক্ষকরা শুভদীপদের বাড়িতে আসেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম পাত্র বলেন, আমাদের স্কুল থেকে যে এমন অভাবনীয় ফল হবে, তা আমরা ভাবতে পারিনি। শিক্ষকরা প্রতিটি ছাত্রকে ভালো করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। শিক্ষকদের সেই প্রচেষ্টার পাশাপশি শুভদীপের নিজের চেষ্টায় এই ফল হয়েছে। শুভদীপের বাবা নিত্যানন্দ মাজি ও মা কৃষ্ণা মাজি বলেন, কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। ছেলে চিকিৎসক হলে সকলের স্বপ্ন সার্থক হবে।
এদিন ফল প্রকাশিত হওয়ার পর শুভদীপের বাড়িতে এসে ফুলের তোড়া নিয়ে শুভেচ্ছা জানান ঝাড়গ্রাম থানার আইসি জয়প্রকাশ পাণ্ডে।