গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
শিক্ষকমহলের মতে, এই জেলার ছাত্রছাত্রীরা সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা পায়। জেলায় একাধিক নামী বিদ্যালয় রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত। তাছাড়া অধিকাংশ পরিবারেরই আর্থিক অবস্থা যথেষ্ট মজবুত। তারপরেও মাধ্যমিকে ভালো ফল না হওয়ার পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। প্রথমত, আসানসোল এবং দুর্গাপুর শহরে বহু নামী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যাঁদের আর্থিক অবস্থা একটু স্বচ্ছল, তাঁরা ছেলে মেয়েদের বেসরকারি ইংরেজি বিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি করছেন। দ্বিতীয়ত, গ্রামের দিকে সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি থাকলেও অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই ঠিক মতো ক্লাস করে না। পরিবারগুলি আর্থিকভাবে মজবুত হওয়ায় এই এলাকার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কিছু করে দেখানোর প্রবণতা কম। তৃতীয়ত, ভালো ফল না করলেও শিল্পাঞ্চলে কাজের অভাব হয় না। তা পড়ুয়ারা চাক্ষুষ করে আসছে। সেকারণে অন্যান্য জেলার ছাত্রছাত্রীরা ভালো ফলের জন্য মরিয়া হয়ে ঝাঁপ দিলেও এখানে সেই ছবি দেখা যায় না বলে শিক্ষকরা জানিয়েছেন।
বারাবনির একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন অসিতবরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, গ্রামীণ এলাকার বহু ছাত্রছাত্রী নিয়মিত ক্লাস করে না। তাদের কেউ পরিবারের ব্যবসা দেখতে শুরু করে। আবার কেউ বাবার সঙ্গে কাজ করতে বেরিয়ে যায়। অভিভাবকদের সঙ্গে বহুবার বৈঠক করেও সুফল পাওয়া যায়নি। অভিভাবকদেরকে এই বিষয়টি বুঝতে হবে। বার্নপুরের একটি বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক রথীন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, চার-পাঁচ বছর আগেও আসানসোলের কোনও না কোনও বিদ্যালয়েরর ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিকে প্রথম দশে জায়গা করে নিত। কিন্তু এখন হচ্ছে না। আসলে শহরে প্রায় সমস্ত বেসরকারি নামী প্রতিষ্ঠানগুলির শাখা রয়েছে। এমনকী গ্রামীণ এলাকাতেও বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। জেলার অভিভাবকদের মধ্যেও ছেলেমেয়েদের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করার প্রবণতা বেড়েছে। ভালো মেধার ছেলেমেয়েরা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে। তারজন্য মাধ্যমিকে ফল ভালো হচ্ছে না। সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের নতুন করে ভাবনা চিন্তা করার সময় এসেছে। কিছু একটা পদক্ষেপ নিতেই হবে। তা নাহলে আগামী বছরগুলিতেও জেলা নজর কাড়তে পারবে না।
শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সার্বিকভাবে ভালো ফল না হলেও কয়েকজন ছাত্রছাত্রী ভালো ফল করেছে। হীরাপুরের সুভাষপল্লি বিদ্যানিকেতনের দ্বীপ সেনগুপ্ত ৬৭৮, রানিগঞ্জের সৌমজিৎ বোস ৬৭৮, শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় ৬৭৬, সুদীপ কুম্ভকার ৬৭৪, কোয়েল গড়াই ৬৭৩, রূপসা সেনগুপ্ত ৬৭২, অমিত মালাকার, ৬৭১ নম্বর পয়েছে। এডিআই অজয় পাল বলেন, আমরা সমস্ত বিদ্যালয়গুলিতে গিয়ে ফলাফল নিয়ে পর্যলোচনা করব। তারপরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।