যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত মহরম মোমিন গ্রামের একবারে শেষপ্রান্তে একটি মাটির বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকত। হুড়ুমদা গ্রামেই তার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি বলে জানা গিয়েছে। মহরম মোমিনের সঙ্গে থাকত তার স্ত্রী ও ছ’বছরের নাতি সৈয়দ আনসারি। মহরমের মেয়ে মারা যাওয়ার পর সৈয়দ তাদের কাছেই থাকত। প্রতিবেশীদের সঙ্গে মহরমের সুসম্পর্ক ছিল না বলে জানা গিয়েছে। নকল চাবি তৈরির পাশাপাশি কাপড় কেটে পোশাক তৈরির কাজ করত মহরম। পুরনো বড় কোনও মামলায় জড়িত না থাকলেও পুরুলিয়ায় লোকসভা ভোটের পরের দিনই বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় রাতারাতি মহরম সংবাদের শিরোনামে চলে আসে।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে হুড়ুমদা গ্রামে বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় মহরম মোমিনের নাতি বছর ছয়ের সৈয়দ আনসারি গুরুতর জখম হয়। পরে তার মৃত্যুও হয়। যদিও ঘটনার পর থেকেই মহরম মোমিন তার বাড়িতে তালা দিয়ে পরিবার সহ অন্যত্র গা ঢাকা দেয়। এদিকে, মৃত শিশুর মৃতদেহ খুঁজে পেতে হিমশিম খেতে হয় পুলিসকে। বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শনে আসেন সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের সদস্যরাও। যদিও তাঁরাও বিস্ফোরণের বিষয়ে নির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ জোগাড়ে কার্যত ব্যর্থ হন। শেষমেশ বিস্ফোরণের ঘটনার প্রায় পাঁচদিন পর গত ১৭ মে হুড়ুমদা গ্রামের কাছে ঝাড়খণ্ড সীমান্ত এলাকার একটি কবরের মাটি খুঁড়ে ওই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিস। ঘটনার প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে মহরম মোমিন তার নিজের নাতির মৃতদেহ গোপনে একটি পুরনো কবরে পুঁতে দেয় বলে অভিযোগ।
বিস্ফোরণ কাণ্ডের জট খুলতে মহরম মোমিনকে হন্যে হয়ে খোঁজা শুরু করে পুলিস। তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় পুলিসকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। অবশেষে রবিবার রাতে হুড়ুমদা গ্রাম থেকেই পুলিস মহরম মোমিনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিসের চোখে ধুলো দিতেই হুড়ুমদা গ্রামে নিজের বাড়িতে না উঠে শ্বশুরবাড়িতে ওঠে মরহম। কিন্তু, তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। পুলিস মহরমের গ্রামে ফেরার খবর পেতেই সেখানে হানা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এবিষয়ে ঝালদার এসডিপিও সুমন্ত কবিরাজ বলেন, বেশ কয়েকদিনের চেষ্টার পর গ্রামেই এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে মহরম মোমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতকে জেরা করে বিস্ফোরণের ঘটনার বিষয়ে তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত বিস্তারিত ভাবে বলার মতো কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।
জেলা পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরার সামনে এখনও পর্যন্ত মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে মহরম। গোটা ঘটনার বিষয়ে সে নিজেও অন্ধকারে রয়েছে বলে জেরায় ধৃত দাবি করেছে। পুলিসি জেরায় ধৃত মহরমের দাবি, বিস্ফোরণে তার নাতি যে জখম হয়েছে সেই খবর সে তার স্ত্রীর কাছ থেকে পায়। কীভাবে ওই বিস্ফোরণ হয়েছে তা তার জানা নেই। যদিও ধৃত পুলিসকে সঠিক তথ্য না দিয়ে বিভ্রান্ত করতে চাইছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান বিস্ফোরণ কাণ্ডে তদন্তকারী পুলিস আধিকারিকদের। পুলিস ধৃতের স্ত্রীর খোঁজেও তল্লাশি শুরু করেছে।