যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
২০১৯ শিক্ষাবর্ষে বিশ্বভারতীতে একাদশ, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পিএইচডি, এমফিল, ডিপ্লোমা ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক হারে ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। যার জেরে প্রচণ্ড অসুবিধার মধ্যে পড়েছে সাধারণ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ঘরের পড়ুয়ারা। অস্বাভাবিক হারে ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে নামেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁদের দাবি, এভাবে অস্বাভাবিক হারে ফি বৃদ্ধি না করে ধাপে ধাপে তা বাড়াতে পারত কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার আশ্রম চত্বরে ব্যানার পোস্টার হাতে নিয়ে মিছিল করে প্রতিবাদ শুরু করেন পড়ুয়ারা। ফি বৃদ্ধির হার না কমালে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। তবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কোনও হেলদোল না দেখানোয় শুক্রবার সমগ্র শান্তিনিকেতন মিছিল করে বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে আসেন পড়ুয়ারা। কিন্তু সেখানে বাধার সম্মুখীন হয়ে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সামান্য বচসা ও ধস্তাধস্তিতেও জড়িয়ে পড়েন। এরপর শান্তিনিকেতনের রাস্তায় রবীন্দ্র সংগীতের মাধ্যমে অভিনব পদ্ধতিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিবের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল, ১৯মে উপাচার্য ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবেন। কিন্তু এদিন সকাল থেকেই পড়ুয়ারা কেন্দ্রীয় দপ্তরের সামনে জমায়েত হলেও উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ না করতে পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারপরই কেন্দ্রীয় দপ্তরের প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। এর জেরে দপ্তরের মধ্যেই আটকে পড়েন কর্মী ও বিভিন্ন কাজে আসা মানুষজন। বিশ্বভারতীর কর্মিসভার সদস্যরা দপ্তর থেকে বেরতে গেলে ছাত্র-ছাত্রীদের বাধার সম্মুখীন হন। তাঁদের সঙ্গে পড়ুয়াদের বেশ কিছুক্ষণ উত্তপ্ত বাদানুবাদ চলে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে মূল ফটকগুলি থেকে তালা খুলে দেওয়া হয়। পরে বিশ্বভারতীর তরফে একটি নোটিস জারি করে জানানো হয়, মঙ্গলবার সকল ভবনের অধ্যক্ষ ও পড়ুয়াদের সঙ্গে ফি বৃদ্ধির বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসবেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। কিন্তু পড়ুয়াদের বারবার তারিখ দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা নোটিসটি উপাচার্যের দপ্তরের সামনে আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন অনৈতিকভাবে বৃদ্ধি করা ফি না কমালে আন্দোলন চলবে। এদিনও তাঁরা রবীন্দ্র সঙ্গীত সহ বিভিন্ন গানের মধ্য দিয়ে নানারকম স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ করেন। পড়ুয়াদের দাবি না মানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিবের দপ্তরে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের মধ্যে মইনুল হক, সোমনাথ সাউ, শ্রীরাধা বসাক বলেন, অস্বাভাবিক হারে ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। যার ফলে বিপাকে পড়েছেন নানা স্তরের ছাত্রছাত্রীরা। কর্তৃপক্ষ কোনওভাবে আলোচনাতেই বসতে চাইছে না। তাই বারবার এভাবে টালবাহানা করছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।
বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব সৌগত চট্টোপাধ্যায় বলেন, উপাচার্য ২১ তারিখ লিপিকা অডিটরিয়ামে ফি বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে সকল ভবনের অধ্যক্ষ ও পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। আশা করি সেদিন এই সমস্যার সমাধান বেরিয়ে আসবে।