গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্দেশ না মানা অফিসারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা (ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন) নেওয়া হবে। এই হুঁশিয়ারিকে কেন্দ্র করে পূর্ত দপ্তরের জেলাস্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই চিঠি হাতে আসার পর পূর্ত দপ্তরের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রতিটি রাস্তা ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে।
পূর্ত দপ্তরের তমলুক ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শিবশঙ্কর মালাকার বলেন, নির্দেশ অনযায়ী ফিল্ড লেভেল ইঞ্জিনিয়াররা রাস্তা পরিদর্শনের কাজ শুরু করেছেন। নির্দেশ অনুযায়ী রাস্তার রিপোর্ট পাঠানোর পাশাপাশি ভাঙাচোরা রাস্তা দ্রুত সংস্কার করা হবে।
পূর্ত দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’মাস ধরে রাজ্যে সাত দফায় ভোট চলায় নিয়ম মাফিক সমস্ত রকম উন্নয়নের কাজ কার্যত স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। গর্ত ও খানাখন্দে ভর্তি অনেক রাস্তাঘাট দিয়ে এখনই চলাচল করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে বর্ষা নামলেও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার কঙ্কালসার চেহারা বেরিয়ে পড়বে। পূর্ব মেদিনীপুরে শ্রীরামপুর থেকে বলাইপণ্ডা যাওয়ার রাস্তার মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার একই হাল। এই পরিস্থিতির খবর পূর্ত দপ্তরের রাজ্য আধিকারিকদের কানেও গিয়েছে। সেই কারণে, গত ১০তারিখ রাজ্য পূর্ত দপ্তরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি অর্ণব রায় সমস্ত জেলার এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সহ অন্যান্য আধিকারিকদের চিঠি পাঠান।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ বর্ষার বৃষ্টি শুরু হতে পারে। বর্ষার সময় পূর্ত দপ্তরের সমস্ত রাস্তাকেই যান চলাচলের উপযুক্ত হিসেবে তৈরি রাখতে হবে। সেকারণে মে মাসের মধ্যে সমস্ত ফিল্ড লেভেল ইঞ্জিনিয়ারকে নিজ নিজ এলাকার প্রত্যেকটি রাস্তা সরজমিনে খতিয়ে দেখতে হবে। তার রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠাতে হবে। বেহাল রাস্তা দ্রুত সারাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। রাস্তায় গর্ত ও খানাখন্দের কারণে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে যাতে কোনও সমস্যা তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। বেহাল রাস্তা সংস্কারে এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়াররা কী কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, সেই সংক্রান্ত তথ্যও সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারকে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এইভাবে ফিল্ড লেভেল ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে প্রত্যেক জোনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার পর্যন্ত সমস্ত স্তরের অফিসারকে রাস্তা সারানো সংক্রান্ত রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকী, গ্যারেন্টি পিরিওডের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও কোনও এজেন্সি রাস্তা সারাই করতে ঢিলেমি দেখালে সেক্ষেত্রেও ওই এজেন্সির বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বহুক্ষেত্রে নির্মাণকাজ চলার জন্য অনেক রাস্তাই খারাপ অবস্থায় থাকে। এক্ষেত্রেও রাস্তা নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হলেও আগে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের উপযুক্ত রাস্তা তৈরি করে দিতে হবে। এজেন্সি রাস্তার কাজ করতে দেরি করলে সময় নষ্ট না করে দ্রুত ওই এজেন্সির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। এরপর আধিকারিকদের কড়া ভাষায় সতর্ক করে বলা হয়েছে, যদি কোথাও দেখা যায় রাস্তা খারাপ অবস্থায় পড়ে রয়েছে, অথচ রাস্তা সারানোর কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, সেক্ষেত্রে অবাধ্য আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই নির্দেশ পাওয়ার জন্য জেলাস্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের কার্যত ঘুম ছুটেছে। ভোটের মরশুমে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মীদের মধ্যে অফিস আসা-যাওয়া অনেকটা নিয়ম রক্ষার বিষয় হলেও চিঠি আসার পর পূর্ত দপ্তরে কিন্তু বিপরীত ছবি দেখা গিয়েছে। কোন এলাকার রাস্তা কেমন তার রিপোর্ট তৈরি করতে তীব্র গরমেও দৌড়তে হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারদের।