কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হেঁড়িয়ার মিত্রচক গ্রামের বাসিন্দা অসিত বেজ পেশায় গানের শিক্ষক। তাঁর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা বেজ মুগবেড়িয়া কলেজ থেকে এবছর সঙ্গীত বিভাগে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন। সম্বন্ধ করে গত ১৪তারিখ স্থানীয় ইড়িঞ্চি এলাকার যুবক সূর্যকান্ত বারিকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন অসিতবাবু। ইংরেজিতে এমএ সূর্যকান্তবাবু কলকাতার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষক। বিয়েতে বরপক্ষ পণ নেবে না বলে জানিয়ে দেয়। কিন্তু বিয়েতে মেয়েকে কী উপহার দেবেন তা নিয়ে চিন্তায় পড়েন অসিতবাবু। বই পাগল মেয়েকে বিয়ের যৌতুক দেওয়া নিয়ে তিনি ছোট শ্যালক তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর পাঁচবেড়িয়া রামচন্দ্র স্মৃতি শিক্ষা মন্দির স্কুলের বাংলার শিক্ষক মহাদেব মান্নার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। এলাকার লাইব্রেরি গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে চলা মহাদেববাবু ভাগনি ও ভাগনিজামাইকে যৌতুক হিসেবে বই দেওয়ার প্রস্তাব দেন। সেইমতো মহাদেববাবু অসিতবাবুকে নিয়ে কলকাতার কলেজস্ট্রিট থেকে ২৫ হাজার টাকার বই কিনে আনেন। সেই বই বিয়ের আসরে সাজিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের দিন বরপক্ষ থেকে শুরু করে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা স্থানীয় অতিথিরাও যা দেখে মুগ্ধ হন। যৌতুকে দেওয়া বইয়ের তালিকায়, পুরাণের গল্প কথা, মহাভারত, রামায়ণ, রামকৃষ্ণ চরিত্রামৃত, বিবেকানন্দের জীবনী, উপেন্দ্র কিশোর রায়চৌধুরী ও সুকুমার রায়ের রচনা সমগ্রের পাশাপাশি বিভিন্ন নামকরা লেখকের উপন্যাস ও ছোটগল্প রয়েছে। এমনকী শিশুপাঠ্যের পাশাপাশি জেমস বন্ডের রচনা সমগ্রও রয়েছে। বই পেয়ে বেজায় খুশি নতুন বর ও কনে। সূর্যকান্তবাবু বলেন, খুব যত্ন করে বই বাড়িতে এনেছি। এখন সবকটি বই দ্রুত পড়ে নেওয়াই আমার মূল লক্ষ্য।
মহাদেববাবু বলেন, আজও বিয়েবাড়িতে বহু মেয়ের বাবা স্বেচ্ছায় মেয়ে ও জামাইকে জীবনযাপনের জন্য বহু সামগ্রী দিয়ে থাকেন। কিন্তু সোনাদানা, আসবাবপত্র ও নানান গয়নার ভিড়ে আমরা নিজেরাই নিজেদের হারিয়ে ফেলি। নিজেদেরকে চেনা, নিজের ভুলত্রুটি শুধরে নেওয়া, অপরকে বোঝা ও সুন্দর সমাজ গড়ে তোলার জন্য বইয়ের থেকে বড় বন্ধু কেউ নেই। সেকারণেই আমরা অন্যান্য যৌতুকের পাশাপাশি বিভিন্ন বই দিয়েছি। মেয়ের বাবা অসিতবাবু বলেন, মেয়ে জামাই শিক্ষিত। তাছাড়া মেয়েরও বই পড়ার নেশা রয়েছে। তাই বিয়েতে মেয়ে ও জামাইকে বিভিন্ন ধরনের বই দিয়েছি। ওরা খুব খুশি।