পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
দু’দিন ধরে চলে রথযাত্রার এই অনুষ্ঠান। তবে পুষ্প রথ ঘিরে এলাকায় টানা এক সপ্তাহ ধরে মেলা চলে। কেবলমাত্র ফুলিয়াই নয়, শান্তিপুর থানার বিভিন্ন জায়গা সহ জেলা ও জেলার বাইরে থেকেও বহু ভক্ত শ্রীকৃষ্ণের এই রথযাত্রার অনুষ্ঠান দেখতে এদিন সকালে ভিড় জমান। পূর্ববঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের এই পুষ্প রথযাত্রা প্রচলন থাকলেও, পশ্চিমবঙ্গের এখন তেমনভাবে পুষ্প রথযাত্রার আয়োজন হয় না।
ইতিহাস বলে, বাংলাদেশ থেকে আসা বেশ কয়েকজন পূর্ববঙ্গের মানুষ মিলিত হয়ে ফুলিয়াতে পুষ্প রথযাত্রার আয়োজন করেছিলেন। তারপর থেকে রীতি মেনে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে পুষ্প রথযাত্রা সহ গোপালের পুজোর এই অনুষ্ঠান হচ্ছে। পুজোর অন্যতম এক উদ্যোক্তা রাধারমণ দাস বলেন, আমরাই এই রথযাত্রার আয়োজন করছি। নদীয়া জেলা চৈতন্য মহাপ্রভু জন্মস্থান বলে প্রসিদ্ধ। এখানে সমস্ত দেবদেবীর পুজোর আয়োজন থাকলেও শ্রীকৃষ্ণের রথযাত্রার আয়োজন নেই। তাই আমরা পূর্ববঙ্গের চোদ্দজন মানুষ মিলে এমন অনুষ্ঠান শুরু করেছিলাম। বর্তমানে প্রায় দেড় মাস আগে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় এই পুজোর আয়োজন করছি। ফুলিয়ার এক ব্যবসায়ী ব্যক্তিগতভাবে এই রথযাত্রা উপলক্ষে পিতলের তৈরি একটি গোপাল মূর্তি দিয়েছেন। সারা বছর সেই গোপাল মূর্তিটি উদ্যোক্তারা নিজেদের বাড়িতে রেখেই পুজো করেন। এরপর বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে সেই মূর্তি ওঠে রথে। এরপর ওই গোপাল মূর্তিটি নিয়ে ফুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করা হয়।
অন্যদিকে, তাহেরপুর থানার বীরনগরে বুদ্ধ পূর্ণিমা তিথিতে পূজিতা হন দেবী ওলাইচণ্ডী। দেবী ওলাইচণ্ডী হলেন বীরনগরের লৌকিক গ্রাম্য দেবী। পুজো ঘিরে অনেক জনশ্রুতি রয়েছে। স্থানীয় গবেষক শুভদীপ বন্দোপাধ্যায় বলেন, কবিকঙ্কন চণ্ডী থেকে জানা গিয়েছে, শ্রীমন্ত সওদাগর নদীপথে সিংহলে যাওয়ার সময় বর্তমান বীরনগর এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে আটকে পড়েছিলেন। এরপর তিনি দেবী ওলাইচণ্ডীর পুজো দিয়ে ফের সিংহল যাত্রা শুরু করেন। এছাড়াও অন্য একটি কাহিনী থেকে জানা গিয়েছে, নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দেবী ওলাইচণ্ডীর পুজো দিয়ে বিশেষ মনস্কামনা লাভ করেছিলেন। এরপর থেকেই লোকমুখে এই দেবীর মাহাত্ম্য গুরুত্ব পেতে শুরু করে। বৌদ্ধ পূর্ণিমা তিথিতে ওলাইচণ্ডীদেবীর পুজোতে নদীয়া জেলার পাশাপাশি অন্যান্য জেলা থেকেও বহু মানুষও বীরনগরে আসেন। অন্যদিকে, এদিন বীরনগরের উত্তরপাড়া এলাকায় প্রায় সাড়ে ৩০০ বছরের প্রাচীন বিন্দবাসিনী পুজোর আয়োজন করা হয়। বিন্দবাসিনী মহিষমর্দিনীর এক রূপ। বারোয়ারি কমিটির উদ্যোগে এই পুজো হয়।