উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
এদিন সকালে তৃণমূলের তরফে গঙ্গাজলঘাটির দুর্লভপুরে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। রাস্তার উপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। দলের নেতা জিতেন গড়াই, নিমাই মাজি ওই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন। গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কের দিনের ব্যস্ততম সময়ে অবরোধের জেরে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে বিক্ষোভ কর্মসূচি তুলে নেওয়া হয়। ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এদিন বিকেলে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের তরফে বাঁকুড়া শহরে মিছিল বের করা হয়। মিছিলে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ, তৃণমূল শিক্ষা সেলের জেলা সভাপতি গৌতম দাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ওই মিছিল বাঁকুড়া বঙ্গ বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে শহর পরিক্রমা করে। গৌতমবাবু বলেন, একদল উচ্ছৃঙ্খল লোক কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে চুরমার করে দেয়। বিদ্যাসাগর বাংলা তথা দেশের গৌরব। বাংলার নবজাগরণে তাঁর অবদান চিরকাল বাঙালির স্মরণে থাকবে। এহেন মনীষী র মূর্তি ভাঙার ঘটনা শুধু নিন্দনীয় নয়, সেইসঙ্গে শাস্তিযোগ্যও। আমরা এদিন কড়া ভাষায় ঘটনার নিন্দা করেছি। পাশাপাশি দোষীদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে শাস্তিবিধানের দাবি তুলেছি।
সিপিএমের তরফে এদিন বাঁকুড়া ও বড়জোড়ায় প্রতিবাদ মিছিল হয়। বিকেলে মাচানতলা থেকে বের হয়ে বাঁকুড়া শহর পরিক্রমা করে। অন্যদিকে, বড়জোড়া বাজার পরিক্রমার পর চৌমাথা মোড়ে ধিক্কার সভার আয়োজন করা হয়। এদিনের কর্মসূচিতে সিপিএম নেতা প্রতীপ মুখোপাধ্যায়, সুজয় চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রতীপবাবু বলেন, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনা অপ্রত্যাশিত। এই ঘটনার পিছনে বড়সড় চক্রান্তের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। মানুষের দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য একদল লোক পরিকল্পিতভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে।
এদিন এসইউসি-র তরফে বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা, শালতোড়ার লক্ষ্মণপুর, ইন্দপুরের শালডিহা সহ অন্যান্য জায়গায় ধিক্কার জানানো হয় বলে দলের নেতা স্বপন নাগ জানান। মাচানতলায় বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতিতে এসইউসি নেতারা মাল্যদান করেন। স্বপনবাবু বলেন, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা অবিলম্বে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছি। পাশাপাশি বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতিতে এদিন শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করা হয়েছে। লেখক শিল্পীদের পক্ষ থেকে বাঁকুড়া শহরের পাটপুর এলাকায় বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়। অবিলম্বে বিদ্যাসাগর কলেজের মূর্তি পুনর্স্থাপনের দাবিতে তাঁরা সরব হন। আয়োজকদের তরফে বিপ্লব বরাট বলেন, মূর্তি ভেঙে বিদ্যাসাগরের স্মৃতি ও সমাজজীবনে তাঁর অবদানের কথা ভোলানো যাবে না।
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে পুরুলিয়া জেলাতেও পথে নামে তৃণমূল কংগ্রেস। পুরুলিয়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে এদিন শহরের প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল। এছাড়াও জেলার একাধিক জায়গায় মিছিল করে তৃণমূল। অন্যদিকে, এদিন ওই একই ইস্যুতে পুরুলিয়া শহরের হাটের মোড়, ঝালদা এবং রঘুনাথপুরে মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে এসইউসি।
অন্যদিকে, এদিন মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতিও পুরুলিয়ায় বিদ্যাসাগরের ছবি নিয়ে মিছিল করে মূর্তি ভাঙার ঘটনার নিন্দা করেন। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে বুধবার রঘুনাথপুর শহরে এসইউসির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ ও ধিক্কার মিছিল করা হয়। ওই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি তোলা হয়।
এদিন আরামবাগ শহরেও তৃণমূল ধিক্কার মিছিল বের করে। এদিন তৃণমূলের আরামবাগ ব্লক সভাপতি তথা পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দীর নেতৃত্বে দলের কর্মীরা আরামবাগ শহরের বাসুদেবপুর এলাকায় বাসযাত্রী প্রতীক্ষালয়ে থাকা বিদ্যাসাগরের ছবিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে ওই এলাকায় কালো ব্যাজ পরে ধিক্কার মিছিলে শামিল হন। স্বপনবাবু বলেন, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে এদিন আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভও দেখিয়েছি।
অন্যদিকে, এদিন বিকেলে গোঘাটে ব্লক ও অঞ্চল স্তরের নেতৃত্বের তরফে সেখানকার প্রত্যেকটি অঞ্চলেই ধিক্কার মিছিল করা হয়েছে বলে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক মানস মজুমদার জানিয়েছেন। এদিনের কর্মসূচিতে গোঘাট-১ ও ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি যথাক্রমে নারায়ণ চন্দ্র পাঁজা ও তপন মণ্ডল, গোঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন পাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।