পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
অন্যদিকে, বিদ্যাসাগরের জন্মভিটে বীরসিংহ গ্রামের বাসিন্দারাও এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন। বীরসিংহ গ্রামে বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, লজ্জাজনক এই ঘটনায় আমরা মর্মাহত। এই ঘটনা যারাই ঘটাক না কেন তারা যে বোধবুদ্ধি হারিয়ে ফেলেছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বীরসিংহ গ্রামের বাসিন্দা তথা ঘাটাল কলেজের অধ্যাপক প্রসাদ ঘোষ বলেন, এই ঘটনার নিন্দা করার ভাষা নেই। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে, তা পুলিস ও প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে নিশ্চিত করতে হবে।
বিদ্যাসাগর কলেজে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে এদিন এসইউসির তরফে পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, ভোগপুর, মেচেদা, তমলুক ও নোনাকুড়ি এলাকায় বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদানের পাশাপাশি পথসভা করে তীব্র ধিক্কার জানানো হয়। তমলুকের হাসপাতাল মোড় থেকে তমলুক কোর্ট চত্বরে বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত ধিক্কার মিছিল করেন এসইউসি নেতা কর্মীরা। কাঁথি ক্যানেল পাড়ে দেশপ্রাণ বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের মূর্তির পাদদেশ থেকে এসইউসি নেতা-কর্মীরা বিদ্যাসাগরের ছবি নিয়ে শহরে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। পরে কাঁথি মহকুমা শাসকের অফিস চত্বরে বিদ্যাসাগরের পূর্ণাবয়ব মূর্তিতে মাল্যদান করা হয়।
দলের জেলা সম্পাদক অনুরূপা দাস বলেন, ত্রিপুরায় লেনিন, অসমে রবীন্দ্রনাথের মূর্তি ভাঙার পর এই রাজ্যে মহান মানবতাবাদী বিদ্যাসাগরের দ্বিশততম জন্মবর্ষে তাঁর মর্মর মূর্তি ভাঙার মতো বর্বরোচিত ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদে তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। বিজেপির এই ধ্বংসাত্মক রাজনীতির প্রতিবাদে সমস্ত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে রাস্তায় নামার আহ্বান জানাচ্ছি।
তমলুক শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে নাগরিক কমিটির তরফে বর্গভীমা মন্দিরের সামনে বিবেকানন্দের মূর্তিতে মাল্যদান করে শহরে মৌন মিছিল বের করেন। এরপর জেলা গ্রন্থাগার লাগোয়া বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মাল্যদান করার পর পথসভা করা হয়।
অন্যদিকে, এদিন দুপুরে তৃণমূলের ছাত্র, যুব ও শিক্ষক সংগঠনের উদ্যোগে ঝাড়গ্রাম শহরের হিন্দু মিশন মাঠ থেকে মৌন মিছিল বের করা হয়। শহর পরিক্রমার পর পাঁচমাথার মোড়ে মৌন মিছিল শেষ হয়।
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শাখার পক্ষ থেকে এদিন দুপুরে জেলশাসক, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক ও জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। সংগঠনের জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপকুমার ভৌমিক বলেন, এই ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। অবিলম্বে এই ঘৃণ্য ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আমরা সর্বস্তরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি।
বামফ্রন্টের তরফে এদিন বিকেলে তমলুকের নিমতৌড়িতে ধিক্কার মিছিল বের করা হয়। অন্যদিকে, মেদিনীপুর শহরের এলআইসি মোড়ে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় যুব তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন সকাল থেকে বিদ্যাসাগরের মূর্তির পাশেই অবস্থানে বসেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এই কর্মসূচিতে ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহহাজরা, মেদিনীপুরের প্রার্থী মানস ভুঁইয়া, বিধায়ক গীতা ভুঁইয়া সহ অন্যান্যরা। মানসবাবু বলেন, নকশালরা একসময় চীনের চেয়ারম্যান আমাদের চেয়ারম্যান বলে অনেক মনীষীর মূর্তি ভেঙেছিল। বহু বছর পর বাংলায় বিজেপির তরফে ফের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জেলার বাসিন্দা হিসেবে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে।
খড়গপুর ও মেদিনীপুর শহরে অমিত শাহের কুশপুতুল দাহ করে প্রতিবাদ জানায় তৃণমূল নেতৃত্ব। মঙ্গলবার রাতে ডেবরায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল নেতৃত্ব। এছাড়া বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়, খড়গপুর কলেজ সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মালা দিয়ে ধিক্কার জানায় ডিএসও।