কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
৫১টি সতীপীঠের মধ্যে অন্যতম এই কঙ্কালীতলা। কথিত আছে, চৈত্র সংক্রান্তিতে মায়ের আবির্ভাব হয়েছিল এখানে। তাই সংক্রান্তির দিন বিশেষ পুজো-অর্চনার মধ্য দিয়ে পুজো করা হয় কঙ্কালী মায়ের। সেই উপলক্ষে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল এখানে। পাশাপাশি এদিন বাংলা নতুন বর্ষ উপলক্ষে ভিড় আরও বাড়ে। মায়ের আবির্ভাব তিথি ও বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলা হয় কঙ্কালীতলায়। প্রায় সাড়ে চারশো স্টল নিয়ে মন্দির সংলগ্ন এলাকায় বসেছে মেলা। নানা ধরনের খাবারের দোকান সহ খেলনা, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ও হস্তশিল্পের দোকানও এসেছে। মেলা চলবে ৪ বৈশাখ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। এদিন মায়ের কাছে পুজো দেওয়ার জন্য লম্বালাইনও পড়ে। ভক্তদের যাতে কোনও ধরনের অসুবিধার মুখে পড়তে না হয়, তারজন্য পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মন্দির চত্বর কাপড়ের শেড দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও এই দু’দিন প্রচণ্ড গরমের জন্য পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কঙ্কালীতলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সবরকম জরুরি অবস্থার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। পঞ্চায়েতের তরফ থেকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসা হয়েছিল। এলাকায় যে কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রচুর পুলিস ও স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন ছিলেন।
কঙ্কালী পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মামন শেখ বলেন, মায়ের আবির্ভাব দিবস ও বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়। আগত মানুষজনের কোনওরকম অসুবিধা যাতে না হয়, তারজন্য আমাদের তরফ থেকে সম্ভাব্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগত পুণ্যার্থী ও সাধারণ মানুষের জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তারমধ্যে কবিগান, কীর্তন, রায়বেঁশে, ছৌ নাচ, নাটক ও বাংলা ব্যান্ডের অনুষ্ঠান ছিল।
কঙ্কালী মায়ের সেবাইত অর্ঘ্য চৌধুরী বলেন, সংক্রান্তির দিন মায়ের আবির্ভাব তিথির বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। তাই সেদিন প্রচুর মানুষ তাঁদের মনস্কামনা নিয়ে মায়ের কাছে আসেন। এছাড়া বাংলা বর্ষের প্রথমদিনে পরিবার-পরিজনকে সঙ্গে করে সকলের শুভ কামনায় কঙ্কালীতলায় ভিড় জমান ভক্তরা।
অন্যদিকে, এদিন শান্তিনিকেতনে প্রথা ও রীতি মেনে পালিত হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। ভোরে বৈতালিক ও তারপরে উপাসনা মন্দিরে সঙ্গীত ভবনের পড়ুয়াদের কন্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীত, বৈদিক মন্ত্র ও স্তোত্র পাঠ সহ উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ভাষণে পরিপূর্ণতা পায় এই অনুষ্ঠান। মন্দিরের অনুষ্ঠান শেষে পুরনো ঘণ্টাতলায় বর্ষবরণের মূল অনুষ্ঠান হয়। সেখানে পাঠভবনের পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করেন। সন্ধ্যায় গৌড়প্রাঙ্গণে চণ্ডালিকা নৃত্যনাট্য অনুষ্ঠিত হয়। পরে ওই একই স্থানে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান হয়। এভাবেই সারাটা দিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলার নতুন বছরকে আপন করে নেয় শান্তিনিকেতন। সকাল থেকেই আশ্রমিক, পড়ুয়া দেশ-বিদেশের পর্যটকরা ভিড় জমান শান্তিনিকেতনে।
বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, চিরাচরিত প্রথা মেনে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়েছে। দিনভর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমাদের উদ্দেশ্য একটাই ছিল যে, সকলে নতুন বর্ষে ভালোভাবে থাকার অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া।