গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে মহিলা, যুব, সরকারি কর্মচারি ফেডারেশন, শ্রমিক সংগঠন, টোটো ইউনিয়ন, শিক্ষা সেল, আইনজীবী সেল প্রভৃতি সংগঠনগুলিকে এক জায়গায় এনে বৈঠক করেন তৃণমূল প্রার্থী। প্রতিটি সংগঠনকেই বলা হয়েছে দলের প্রচারে নামতে। সংগঠনের যাঁরা সদস্য, তাঁদের ভোট যেন অন্যত্র না যায়। তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে প্রতিটি সংগঠনের নেতাদের।
নির্বাচনে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের দিকে সকলের নজর থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এই কেন্দ্রে এবার শাসকদল প্রার্থী বদল করেছে। গত দু’বারের সংসদ সদস্য তাপস পালকে বাদ দিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্রকে। তিনি বড় তারকা প্রার্থী না হলেও লড়াকু নেত্রী। তাই তিনি কতটা লড়াই দিতে পারেন, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন সকলে। আবার এই কেন্দ্রটিকে বিজেপি পাখির চোখ করেছে। ভোট ঘোষণার আগে থেকে এখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের এনে সভা, সমিতি করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির জেলা নেতারা চেয়েছিলেন, এখানে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জলুবাবুকে প্রার্থী করা হোক। কিন্তু তা হয়নি। এখানে প্রার্থী করা হয়েছে প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবেকে। প্রার্থী নিয়ে প্রথম দিকে ক্ষোভ থাকলেও, কল্যাণবাবু প্রচার শুরু করতেই ক্ষোভ কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। খেলার ময়দানের লোক রাজনীতির ময়দানে কতটা ‘ফাইট’ করতে পারেন, সেদিকেও নজর রয়েছে সকলের।
তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া প্রচারের দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে চষে বেড়াচ্ছেন তিনি। এবার দলের শাখা সংগঠনগুলিকে কাজে লাগাতে সোমবার রাতে কৃষ্ণনগরে বৈঠক করলেন তিনি। শাখা সংগঠনগুলির নেতারা এই বৈঠকে যোগ দেন। এদিনের বৈঠকে ছিলেন কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অসীম সাহা। তিনি বলেন, শাখা সংগঠনগুলি সারা বছর ধরেই দলের নানান কমর্সূচির সঙ্গে যুক্ত থাকে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সদস্যদের যোগাযোগও থাকে। তাই শাখা সংগঠনের সদস্যরা এই নির্বাচনে আরও যাতে সক্রিয় থাকেন, তা বলা হয়েছে। বাড়তি কিছু দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামতে হবে সকল সংগঠনকে।
প্রসঙ্গত, একসময়ের বামেদের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে ২০০৯ সালে প্রথমবার তৃণমূল সিপিএম প্রার্থী জ্যোর্তিময়ী সিকদারকে হারায়। অভিনেতা তাপস পাল ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন। সিপিএম প্রার্থী ৩৫ শতাংশ ভোট পান। তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের মার্জিন ছিল ৭৭ হাজার ৩৮৬। ২০১৪ সালে তাপস পাল পান ৩৫ শতাংশ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিপিএম প্রার্থী শান্তনু ঝা পান ২৯ শতাংশ ভোট এবং তৃতীয় স্থানে থাকা বিজেপির সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় পান ২৬ শতাংশ ভোট। সেবার ৭১ হাজার ২৫৫টি ভোটে জয়ের মার্জিন ছিল। এবার প্রার্থী বদল হয়েছে শাসকদলের। নতুন প্রার্থী অতীতের সব রেকর্ড ভাঙবে বলে তৃণমূলের জেলা নেতারা দাবি করেছেন। ভোট প্রাপ্তির শতাংশের হারও বাড়বে। আবার বিজেপিও এই আসনটিতে নজর দিয়েছে। বিজেপির নদীয়া(উত্তর) জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার বলেন, আমরা বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচাগ্র মেদিনী। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার মানুষ আমাদের সমর্থন করেছেন। শাসকদল ভোট গ্রহণে বুথ দখল ও ভোট গণনায় কারচুপি না করলে নদীয়া জেলার ইতিহাস বদলে যেত। পঞ্চায়েতে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেনি। লোকসভায় ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। কারণ, এবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রহরায় ভোট হবে। তৃণমূল যতই শাখা সংগঠনকে পথে নামাক, মানুষ চুপচাপ পদ্মফুলে ছাপ দেবেন। কৃষ্ণনগরের মাটিতে এবার গেরুয়া আবির উড়বে।