বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
তূণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা বলেন, ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার পরিধি বেশ বড়। শুধু শহর নয়, প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের কাছে উন্নয়নের বার্তা পৌঁছতে হবে। তাই দেরি না করে গোটা এলাকা চষে বেড়াচ্ছি। তাতে দলীয় কর্মী ও সমর্থক ছাড়াও সাধারণ মানুষের বিপুল সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
সিপিএম প্রার্থী সুনীল খাঁ বলেন, শুরু থেকেই প্রচার শুরু করেছি। বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের উত্তর পশ্চিমে বড়জোড়া এলাকা থেকে প্রচার শুরু হয়েছে। পরপর বিষ্ণুপুর, ওন্দা, কোতুলপুর, ইন্দাস, খণ্ডঘোষ প্রভৃতি এলাকায় ধারাবাহিকভাবে প্রচার চলবে। ইতিমধ্যে দলের রাজ্য সম্পাদক সুর্যকান্ত মিশ্র আমার সমর্থনে বিষ্ণুপুরে সভা করেছেন। অন্যান্য নেতারাও আসবেন। তার ফাঁকে আমি জেলা নেতাদের নিয়ে গোটা এলাকায় প্রচার চালাব। কেন্দ্রে বিজেপি ও রাজ্যে তৃণমূল এই দুই সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষ বিরক্ত। বিকল্প হিসেবে বামেদের প্রতি ভরসা বাড়বে। তাই প্রচারে কোনও রকম খামতি রাখব না।
বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ বলেন, ভোট এখনও অনেক দেরি। দল বদল করায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। আদালতের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমি বিষ্ণুপুরে এখনও পর্যন্ত ঢুকিনি। বর্ধমানের খণ্ডঘোষ ও গলসি এলাকায় প্রচার শুরু করেছি। বিষ্ণুপুরের মানুষ আমার আসার জন্য অপেক্ষায় একপ্রকার মুখিয়ে রয়েছেন। আমি তাঁদের আর একটু ধৈর্য ধরতে বলেছি। সুষ্ঠুভাবে যাতে প্রচার করতে পারি তার জন্য ইতিমধ্যে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। সবুজ সংকেত পেলেই বিষ্ণুপুরে গিয়ে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ব।
বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর, ইন্দাস, সোনামুখী, ওন্দা, বড়জোড়া ও বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ বিধানসভা কেন্দ্র এলাকা রয়েছে। মোট ভোটার রয়েছে ১৩লক্ষ ৮৭হাজার ৪৫২জন। এতটা এলাকায় মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য অনেকটা সময় প্রয়োজন। বিশেষ করে প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছনোটা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের ভীষণ প্রয়োজন। কিন্তু, অনেক ক্ষেত্রে সময়ের অভাবে তা সম্ভব হয়নি। ব্লক ভিত্তিক প্রচার করেই ক্ষান্ত হতে হয়। এবার বিষ্ণুপুরে কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত প্রার্থী দেয়নি। তাই লড়াইটা ত্রিমুখী হবে বলে রাজনৈতিকমহল মনে করছে।
সেই হিসেবে তৃণমূল প্রার্থী শ্যামলবাবু সময়টাকে পুরো ব্যবহার করছেন। নাম ঘোষণার দিন থেকে তিনি আদাজল খেয়ে প্রচারে নেমে পড়েছেন। ইতিমধ্যে শ্যামলবাবু ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার অনেক জায়গাতেই প্রচার সভা করেছেন। তিনি অঞ্চল ভিত্তিক মানুষের কাছে পৌঁছনোরও চেষ্টা করছেন। তাঁর সমর্থনে দলের শীর্ষ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সোনামুখীতে একটি বড় কর্মিসভা সেরে ফেলেছেন। সিপিএম প্রার্থী সুনীল খাঁও প্রচারে খামতি রাখতে চাননি। নাম ঘোষণার পর পুরো এক সপ্তাহ তিনি বড়জোড়া ও সোনামুখী এলাকা চষেছেন। বিষ্ণুপুরে তাঁর সমর্থনে একটি বড় জনসভাও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, নাম ঘোষণার পর কয়েকদিন কেটে গেলেও বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ এখনও বিষ্ণুপুরে সেভাবে প্রচার শুরু করতে পারেননি। এমনকী, নাম ঘোষণার পরে তিনি বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকায় পা রাখেননি।
প্রসঙ্গত, সৌমিত্রবাবু ২০১১সালে কংগ্রেসের টিকিটে জোট প্রার্থী হিসেবে বিধানসভা ভোটে জয়ী হন। পরে ২০১৪সালে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে সংসদ সদস্য হন। কিন্তু, একবছর আগে থেকে নানা কারণে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়তে থাকে। সম্প্রতি বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির টিকিট পাওয়ার আশ্বাস পেয়ে তিনি তৃণমূল ছাড়েন। প্রত্যাশিতভাবেই তাঁর নাম ঘোষিত হয়। ইতিমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে চাকরির নামে টাকা আদায়, বেআইনিভাবে বালি লুট সহ একাধিক অভিযোগে মামলা হয়। ওই মামলার কারণে আদালত তাঁকে বাঁকুড়া জেলায় ঢোকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তাই নাম ঘোষণার পর কয়েকদিন কেটে গেলেও এখনও তিনি বিষ্ণুপুর মহকুমা এলাকায় ভোট প্রচার শুরুই করতে পারেননি। এতে দলের কর্মী মহলে হতাশা বাড়ছে।