বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
ঘটনাস্থল থেকে বাইক ও মারুতিভ্যানটি উদ্ধার করেছে পুলিস। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মারুতিভ্যান থেকে ধারালো অস্ত্র, দু’টি মোবাইল ফোন ও বোমা মিলেছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে রক্তমাখা জুতো। জেলার পুলিস সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ওই ঘটনাটি নিয়ে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ১৩ জন অভিযুক্তের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। তদন্ত চলছে। রিপোর্ট না মেলা পর্যন্ত ঘটনার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।
ডোমকল ব্লকের দাপুটে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে আলতাব ছিলেন একজন। পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষের পদ সামলানোর পাশাপাশি তিনি তৃণমূলের গড়াইমারি অঞ্চল কমিটির সভাপতি ছিলেন। কুচিয়ামাড়ি গ্রামে তাঁর বাড়ি। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহাদিয়ার এলাকায় কর্মিসভা করেন আলতাব। সভার পর তিনি সাহাদিয়ার মোড়ে চায়ের দোকানে বসে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার পর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সাবিরের সঙ্গে বাইকে বাড়ি যাচ্ছিলেন। সাবির বাইক চালাচ্ছিলেন। মোল্লাপাড়ায় ইদগাহ ময়দানের সামনে তাঁদের উপর হালমা চালায় সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলেই আলতাবের মৃত্যু হয়। রাতেই ডোমকল মহকুমা হাসপাতাল থেকে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয় সাবিরকে।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে সাবির বলেন, শুনশান রাস্তায় ধীরগতিতে বাইক নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। উল্টোদিক থেকে একটি মারুতি ও কয়েকটি বাইক দেখে সাইড দিই। তা সত্ত্বেও মুখোমুখি ধাক্কা মারে ওই মারুতিটি। বাইক থেকে দু’জনে ছিটকে রাস্তার পাশে খালে পড়ি। এরপর ধারালো অস্ত্র হাতে ১৪-১৫ জন আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কোনওরকমে বাগান দিয়ে দৌঁড়ে গ্রামে পালিয়ে যাই। হামলাকারীদের অনেককেই চিনতে পেরেছি। বহুদিন আগে ওরা তৃণমূল ছেড়ে দিয়েছে। এখন ওরা কংগ্রেস ও সিপিএম করছে।
গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে গেলে দুষ্কৃতীরা মারুতিভ্যান ফেলে বাইকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আলতাবের মৃতদেহ উদ্ধার করে। সেখান থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে আলতাব ও সাবিরের বাড়ি। গ্রামবাসীরা বলেন, প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে আলতাবকে গাড়ি চাপা দিয়ে মারার চেষ্টা হয়েছিল। তাতে সফল না হওয়ায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে দুষ্কৃতীরা।
মঙ্গলবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিসমর্গে আলতাবের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত হয়। এদিন মৃতদেহে মাল্যদান করেন তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অশোক দাস, সুবোধ মণ্ডল, অরিৎ মজুমদার, সৌমিক হোসেন প্রমুখ। গ্রামে মৃতদেহ নিয়ে মিছিল করা হয়। ডোমকল পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি সৌমিক বলেন, আলতাবের দক্ষতায় গড়াইমারিতে দলের ভিত চাঙ্গা হয়েছিল। সন্ত্রাস সৃষ্টি করে এলাকা দখলের উদ্দেশ্যে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে কংগ্রেস ও সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা।
সিপিএমের মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের প্রার্থী বদরুদ্দোজা খান অবশ্য বলেন, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই ওই খুনের ঘটনা ঘটেছে। মিথ্যা অভিযোগ করে সিপিএম কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃত সিপিএম কর্মীর বাড়ি মোহনপুরে। প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, তৃণমূলই তো বলে কংগ্রেসের কেউ নেই। তাহলে কংগ্রেস কীভাবে খুন করে? তৃণমূলের অভিযোগ ভিত্তিহীন।