বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রার্থী ঘোষণার আগে পর্যন্ত এই শহরে শাসকদলের তিন গোষ্ঠীর মধ্যে দড়ি টানাটানি চলছিল। কিন্তু মুনমুন সেন শহরে আসতেই উধাও হয়ে গিয়েছে কোন্দল। সবাই একজোট হয়ে প্রার্থীকে জেতানোর অঙ্গীকার করেছেন। তাঁরা প্রচারেও নেমেছেন। রবিবার মিছিল শেষে বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রার্থী বলেন, এখানকার নেতারা সংগঠিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে অনেক কাজ করেছেন। আমি তাঁর চাঁদ। কিন্তু আমার পাশে বসে থাকা নেতারা সবাই আসল স্টার। আমরা ঝগড়া করব না। সবাইকে কাছে টেনে একসঙ্গে কাজ করব। বাঁকুড়া আমার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। আসানসোলও আমার মনের মধ্যে থাকবে।
সুচিত্রাকন্যা সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলকে আক্রমণ না করলেও তিনি তাঁর বক্তব্যে বুঝিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন সারা দেশে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি বলেন, আগে কংগ্রেস নেতারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নাম ধরে ডাকতেন। কিন্তু এখন তাঁর নামের আগে ম্যাডামজি যোগ করেন। আমার মেয়েরাও আসানসোলে প্রচারে আসবে। তারা অভিনেত্রী হিসেবে আসবে না। সুচিত্রা সেন ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মান রাখার জন্য আসবে।
রবীন্দ্রভবনে আসানসোলে শাসকদলের প্রথম সারির নেতারা হাজির ছিলেন। তাঁরা সকলেই প্রার্থীকে জয়ী করার অঙ্গীকার করেন। রবিবার আসানসোলে মিছিলেও জনজোয়ার দেখা যায়। সেখানেও সব নেতারাই হাজির ছিলেন। এদিন কর্মীদের উদ্দেশে আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, যাঁরা আমাদের পছন্দ করেন না, তাদের বাড়িতেও আমাদের যেতে হবে। ব্যক্তিগত ইগো রাখা যাবে না। আমাদের নিজেদের তাগিদেই প্রার্থীকে জেতাতে হবে। কোনও কারণে অঘটন হলে অনেক কাউন্সিলার, মেয়র পরিষদ সদস্য এবং অনেক পদাধিকারী টিকিট পাবেন না। আমাদের সবার উপরে রাজ্য নেতৃত্ব নজর রাখছে।
কর্মীদের উদ্দেশে বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় বলেন, শুধু দলের অফিসে বসে থাকলে চলবে না। বুথে বুথে ঘুরুন। ২০১৪ সালে আমাদের মধ্যে অহঙ্কার হয়ে গিয়েছিল। মানুষ তার শিক্ষা দিয়েছে। সেই ভুল যেন আর না হয়। অহঙ্কার ঝেড়ে ফেলে মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন। দলের প্রবীণ নেতা তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এবার আমাদের সম্মান রক্ষার লড়াই। অনেকে পার্টিঅফিসে চেয়ার অলঙ্কৃত করে বসে থাকেন। কিন্তু তাঁদের বুথে দেখা যায় না। কোনও কাজও তাঁরা করেন না। সেটা করলে চলবে না। সবাইকে মাঠে নেমে কাজ করতে হবে। প্রার্থীকে আমাদেরকে জেতাতেই হবে। কুলটির বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ২০১৪সালে কুলটিতে চোরাস্রোত বয়ে গিয়েছিল। সেটা আমরা বুঝতে পারিনি। কিন্তু এবার প্রার্থীকে কুলটি নিরাশ করবে না। এদিনের কর্মিসভা থেকে দলের যুব নেতা অভিজিৎ ঘটক, অশোক রুদ্রও দলকে জয়ী করার আহ্বান জানান।
এদিন তৃণমূল প্রার্থী আসানসোলের পাশাপাশি সালানপুরেও কর্মিসভা করেন। সেখানেও দলের কর্মী এবং সমর্থকদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। সেলিব্রিটি প্রার্থীর সঙ্গে অনেকে সেলফি তোলেন। মুনমুন সেনও বিরক্ত না হয়ে সবার সঙ্গে হাসিমুখেই সেলফি তোলেন। সালানপুরেও প্রার্থী পরিণত বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, আমি কাজ করার জন্য এসেছি। গ্রামে গ্রামে ঘুরে মানুষের কথা শুনব। হিন্দুস্থান কেবলস নিয়ে সংসদে আগে কথা বলা উচিত ছিল। আমি জিতলে প্রথম কাজ হবে সংসদে এনিয়ে কথা বলা। পশ্চিম বর্ধমানের তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন দাসু বলেন, প্রতিটি ব্লকেই প্রার্থী কর্মিসভা করবেন। সব জায়গার কর্মীরা ময়দানে নেমে পড়েছেন। প্রসঙ্গত, প্রচারে বিরোধীদের থেকে কয়েক কদম এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। বামেদের এখনও প্রার্থীই ঘোষণা হয়নি। বিজেপি প্রচারে নামলেও তারা এখনও ঝড় তুলতে পারেনি।