কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
মুর্শিদাবাদ জেলায় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা নতুন নয়। গত তিন মাসের মধ্যে বেশ কয়েকজন অস্ত্র কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ধৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই করার সময় পুলিস নাজুর নাম জানতে পারে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সোর্সের দেওয়া খবর অনুসারে ওই রাতে নাজুর বাড়িতে হানা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী টলটলি ঘোষপাড়ায় নাজুর বাড়ি। দীর্ঘক্ষণ ধরে বাড়ির প্রতিটি ঘর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। অবশেষে নাজুর বাড়ির পিছনে জমির মাটি খুঁড়ে আগ্নেয়াস্ত্র ভর্তি বস্তা উদ্ধার করা হয়। এরপর নাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন জলঙ্গি থানার ওসি বিপ্লব কর্মকার।
পুলিস সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ধৃতের কাছ থেকে আটটি সেভেন এমএম পিস্তল, একটি নাইন এমএম পিস্তল, দু’টি মাস্কেট, ৩৪রাউন্ড গুলি ও ১০টি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট মামলা রুজু করা হয়েছে।
এদিন ধৃত অস্ত্র কারবারিকে বহরমপুরে সিজেএম আদালতে তোলা হয়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের সঙ্গে বিহারের মুঙ্গেরের আগ্নেয়াস্ত্র কারবারিদের যোগাযোগ আছে বলে জানা গিয়েছে। সেখান থেকে অস্ত্রগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল বলে পুলিসের ধারণা। এলাকাবাসী ও পুলিসের নজর এড়াতেই বাড়ির পিছনে মাটির নীচে সেগুলি মজুত করেছিল সে। এই কারবারে ধৃতের বউদি যুক্ত বলে অভিযোগ। সেই মহিলা গা ঢাকা দিয়েছে। সে এই কারবারে ক্যারিয়ার হিসেবে কাজ করত বলে জানিয়েছে পুলিস। লোকসভা ভোটে এলাকা দখলের রাজনীতিতে ওই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি ব্যবহার করা হতো বলে পুলিসের অনুমান। অস্ত্রগুলি ১৮হাজার টাকা পিস হিসেবে কেনা হয়েছিল। সেগুলি ৩৪ থেকে ৩৫হাজার টাকা পিস হিসেবে বিক্রি করা হতো বলে ধৃতকে জেরা করে জানতে পেরেছেন পুলিস আধিকারিকরা। শুধু বেআইনি অস্ত্র কারবার নয়, বাংলাদেশ সীমান্তে চোরাচালান চক্রও নিয়ন্ত্রণ করত ধৃত। অনেকদিন ধরেই তাকে খুঁজছিল বিএসএফ।
পুলিস সুপার বলেন, ধৃত কারবারি অস্ত্রগুলি কোথায় সরবরাহ করতো তা জানার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি, প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ড ও প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে বিএসএফ ও ঝাড়খণ্ড পুলিসের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।
এদিকে, গত ১০মার্চ লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার জলঙ্গি থানা এলাকা থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় শোরগোল পড়েছে এলাকায়। জানুয়ারি থেকে এদিন পর্যন্ত জেলায় প্রায় ১৭০টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৫০০টির মতো গুলি সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই অবস্থায় ভোটের ৩৮দিন আগেই জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাল নির্বাচন কমিশন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বিকেলে এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী জেলায় আসে। তাদের শহরের পুলিস লাইনে রাখা হয়েছে। তাদের নিয়ে এদিন বিভিন্ন এলাকায় রুট মার্চ করে বহরমপুর থানার পুলিস। জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশমতো এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী বিভিন্ন থানা এলাকায় ঘুরে এরিয়া ডমিনেশন করবে। পাশাপাশি, ভোটগ্রহণ পর্ব নিরাপদে সংগঠিত করার ব্যাপারে বাহিনীর মাধ্যমে গ্রামবাসীকে আশ্বস্ত করা হবে। ভোটদানে গ্রামবাসীর আগ্রহ বাড়াতেই এমন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।