গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
কেতুগ্রাম-১ ব্লকের রাজুর পঞ্চায়েতের রায়খা গ্রামের বাসিন্দা ফজলুল হকের ছেলে খাইরুল আহসান শেখ ১৯ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। বাড়িতে তার দু’পায়ে শিকল পরিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ। খাইরুলের চিকিৎসার খরচ জোগাতে জমিজমা, গয়না সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন ফজলুল সাহেব। তিনি বলেন, পশুর মতো নিজের ছেলেকে শিকল পরিয়ে বেঁধে রাখতে হয় আমাদের। সাত বছর ধরে ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে না পেরে প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরছি। তাই এসব আর দেখতে চাই না। পরিবার নিয়ে আমাদের আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনও উপায় নেই।
জানা গিয়েছে, ২০০০সালের ১৩মার্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় খাইরুল মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। রাজুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র খাইরুল পড়াশোনায় ভালো ছিল বলে প্রতিবেশীদের দাবি। ছেলের চিকিৎসার জন্য মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গায় ছুটে বেরিয়েছেন তার বাবা-মা। জমানো টাকা, স্ত্রীর গয়না, জমিজমা এমনকী নিজেদের ভিটের বেশির ভাগটাই বিক্রি করতে হয়েছে ফজলুল সাহেবকে। সবকিছু বিক্রি করেও এখনও সুস্থ হয়নি খাইরুল। তাই আজ নিঃস্ব হতে বসেছেন ফজলুল সাহেব।
তাঁদের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, একটি তক্তপোশের উপর দুই পায়ে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে খাইরুলকে। শিকল বাঁধা অবস্থায় খাইরুল বলে, আমি স্কুলে যেতে চাই। খাইরুলের মা খাইরুন্নেসা বিবি বলেন, ১৯ বছর ধরে ছেলেকে এমন অবস্থায় দেখে আর ভালো লাগছে না। আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছে। ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমরা সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছি। তাই আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চিকিৎসার খরচ জোগাতে প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরেছি। তাতে কোনও লাভ হয়নি। পড়ার জন্য আমার ছেলে কাঁদে। কিন্তু ওকে আমরা শিকল পরিয়েই রাখি। যাতে কোনও কিছু বিপদ না ঘটায়।