বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
সোমবার এসটিকেকে রোডের পারুলিয়া বাজারে জঙ্গি হামলায় শহিদদের স্মরণে একটি সভার আয়োজন করেন প্রাক্তন সেনা জওয়ান ও তাঁদের পরিবারবর্গ। সেখানেই পূর্বস্থলী থানার আইসি রাকেশ মিশ্রর হাতে সেই আবেদনপত্র তুলে দেন এলাকার প্রাক্তন সেনাকর্মীরা। ওই আবেদনপত্রে ৭১ জন প্রাক্তন সেনাকর্মী স্বাক্ষর করে জানিয়েছেন, কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে পাকিস্তানি জঙ্গিদের হানায় ৪৯ সেনার মৃত্যুতে তাঁরা শোকাহত। এর বদলা চান। তাঁরা জঙ্গিদমনে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত। সেনাবাহিনীর ডাক পেলেই তাঁরা যুদ্ধে রওনা দেবেন। শরীরের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত তাঁরা লড়াই করবেন। আইসি বলেন, পূর্বস্থলীর ৭১ জন প্রাক্তন সেনাকর্মীর স্বাক্ষর করা আবেদনপত্র পেয়েছি। এটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব।
ওইদিন শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে মোমবাতি জ্বালানো হয়। কাশ্মীরে সেনাদের উপর জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করেন তাঁরা। সেখানে পূর্বস্থলীর সমস্ত প্রাক্তন সেনাকর্মী এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়ার ডাক দেন। ভারতীয় সেনাকে সাহায্যের জন্য তাদের পাশে দাঁড়াতে চান তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের উদ্দেশে আবেদনপত্র লিখে তাতে একে একে স্বাক্ষর করেন ৭১ জন প্রাক্তন সেনাকর্মী। তারপর প্রাক্তন মেজর তারিণীকান্তি বিশ্বাস সেই আবেদনপত্র আইসি হাতে তুলে দেন। তারপর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তাঁরা এসটিকেকে রোডে মৌন মিছিল করেন।
তারিণীবাবু বলেন, চাকরি জীবনে কাশ্মীরে পাকিস্তান সীমান্তে সাতবছর ডিউটি করেছি। ৯৯-এর কার্গিল যুদ্ধে লড়াই করেছিলাম। ওখানকার সমস্ত রাস্তাঘাট আমার চেনা। পাকিস্তান জঙ্গিদের সামনে রেখে কাশ্মীরে ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামাতে আমাদের ৪২জন সেনাকে ওরা কাপুরুষের মতো পিছন থেকে হামলা চালিয়ে মেরেছে। দেশের এই পরিস্থিতিতে আমরা আর ঘরে বসে থাকতে চাই না। সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে আমরা সীমান্তে যেতে প্রস্তুত। আমাদের প্রাক্তন সেনাদের সকলেই যুদ্ধে যেতে চাইছেন। রাজ্যপালের কাছে আমরা আবেদন পাঠিয়েছি, যাতে সেনাবাহিনীকে সাহায্যের জন্য আমাদের ডাকা হয়।
প্রাক্তন মেজর উদয় শঙ্কর মজুমদার, দীপক কুমার পাল, দীনেশ দেবনাথ, গণেশ মজুমদার, স্বপন মল্লিক, শরৎ শিকদার, সুবল শর্মা বলেন, চাকরি জীবনের বেশিরভাগ সময় কাশ্মীরে ডিউটি করেছি। অনেক জঙ্গিকে খতম করেছিলাম। পাকিস্তান জঙ্গিদের মদতদাতা। ওরা ভারত দখল করতে চায়। আমরা জওয়ানদের মৃত্যুর বদলা চাই। প্রাক্তন হলেও সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ এখনও আমরা ভুলে যায়নি। সীমান্তে গিয়ে ভারতীয় সেনাকে আমরা সাহায্য করতে চাই।
পারুলিয়ার এক প্রাক্তন সেনানায়ক মন্টু মজুমদার বলেন, কার্গিল যুদ্ধে লড়াই করেছি। আমার ছেলে সৌরভ মজুমদার সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছে। সৌরভ এখন জম্মু-কাশ্মীরে পোস্টিং রয়েছে। এই সময় ছেলের পাশে থেকে জঙ্গিদমনে লড়াই করতে পারলে গর্বিত হব। আমরা জীবনের শেষ নিঃশ্বাস অবধি লড়াই করতে প্রস্তুত।