পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
স্থানীয় মানুষজন বিষয়টি থেকে রাজনীতিকে দূরে রাখতে চাইলেও অপহৃতার বাবার গেরুয়া শিবিরে যোগদান ও তাঁর সঙ্গে স্থানীয় এক দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতার একাধিক মামলার জেরে বিষয়টিতে রাজনৈতিক গন্ধও লেগেছে। অভিযোগ জানাতে বিজেপির জেলা সভাপতি সহ গেরুয়া শিবিরের নেতারা থানায় হাজির হয়েছিলেন। যদিও পুলিস এই ঘটনার সঙ্গে ওই যুবতীর ব্যক্তিগত কোনও সম্পর্কের বিষয় যুক্ত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে।
পুলিস সুপার শ্যাম সিং বলেন, আমরা একজনকে আটক করেছি। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ পাওয়া যায়নি। মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য পুলিসের বিভিন্ন টিম নানা জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে। পুলিস কুকুরের সাহায্যও নেওয়া হচ্ছে। সিআইডির বিশেষজ্ঞদের এনে দুষ্কৃতীদের স্কেচ করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিছু বিশৃঙ্খলাকারীর উস্কানিতে সাধারণ মানুষ আন্দোলন করছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলার চেষ্টা করছি। বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার লাভপুরের বাবুপাড়ার বাসিন্দা সুপ্রভাত বটব্যালের বছর বত্রিশের মেয়েকে বাড়ি থেকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে লাভপুর। রাত থেকে টায়ার জ্বালিয়ে শুরু হয়ে যায় রাস্তা অবরোধ। পুরনো বাসস্ট্যান্ড ছাড়াও লাঘাটা ব্রিজ, ষষ্ঠীনগরে টায়ার জ্বালিয়ে রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়। সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে লরি। বাস যোগযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এমনকী, বাইক চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিসের গাড়ির লক্ষ্য করে বাঁশ ও লাঠি ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। কয়েকজন সাংবাদিককেও হেনস্তা করা হয়। কয়েকটি ওষুধের দোকান ছাড়া সব দোকানপাট বন্ধ ছিল।
এদিকে আন্দোলনের জেরে বিপাকে পড়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের। কারণ, লাভপুরেই দু’টি মাধ্যমিক পরীক্ষার সেন্টার রয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা নিজেদের উদ্যোগেই পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছে।
অপহৃতার বাবা সুপ্রভাতবাবু প্রথমে নকশাল করতেন। পরে বাম আমলে তিনি এলাকার জোনাল কমিটির সদস্য হন। একসময় তিনি সিটুর প্রভাশালী নেতা ছিলেন। পরে তিনি বিধায়ক মণিরুল ইসলামের হাত ধরে তৃণমূলে যান। এবারের পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপিতে নাম লেখান। এরপর নিজের বাড়িতে ভোট নিয়ে মিটিং করার সময় তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা হামলা করে বলে সুপ্রভাতবাবু অভিযোগ তোলেন। সেখানে মূল অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের এক জেলা নেতা। এরপর সুপ্রভাতবাবুর বিরুদ্ধে নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ করা হয়।
কয়েকদিন আগে অভিযোগ ওঠে,ওই তৃণমূল নেতা সহ ব্লকের নেতাদের খুনের ষড়যন্ত্র করছেন সুপ্রভাত বটব্যাল। এনিয়ে থানায় মামলাও রুজু হয়। যেকারণে তিনি লাভপুরে থাকতেন না। তারপর এই ঘটনার জেরে স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক রং চড়ছে।
বিজেপি জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় থানায় এসে বলেন, সুপ্রভাত বটব্যাল আমাদের জেলার নেতা। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। তারমধ্যেই এই ঘটনা। আমরা চাই, পুলিস নিরপেক্ষ তদন্ত করুক। সুপ্রভাত বটব্যাল বলেন, এই ঘটনার পিছনে ওই তৃণমূল নেতার হাত আছে বলে আমার মনে হয়। আমি থানায় ওনার নামে আলাদা অভিযোগ দায়ের করব। ওই তৃণমূল নেতা বলেন, আমার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করেছেন বলে আমি শুনিনি। পুলিস তদন্ত করুক।