পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
গত বিধানসভা নির্বাচনের পরই অধীরের দুর্গের স্তম্ভ ভাঙতে শুরু করেন শুভেন্দুবাবু। যার প্রভাব পড়ে পঞ্চায়েত ভোটে । জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে তৃণমূলের সামনে কংগ্রেস দাঁড়াতে পারেনি। শুভেন্দুবাবুর নেতৃত্বে তৃণমূল জেলার অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত, সমস্ত পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ দখল করে। এরপর কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন এবং সিপিএমের দু’জন বিধায়ক তৃণমূলে শামিল হন। বর্তমানে জেলায় তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা ১২জন। এই শক্তির উপর ভর করেই জেলার মাটিতে একাধিক প্রকাশ্য সভায় লোকসভা ভোটে অধীরকে হারানোর ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু। সেই লক্ষ্যে পৌঁছনোর ‘ব্লু-প্রিন্ট’ তৈরি করতেই আজ তিনটি সভা করবেন তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুর শহরে রবীন্দ্র সদনে সকাল ১১টা নাগাদ দলের মহকুমা, ব্লক ও অঞ্চল সভাপতি, শাখা সংগঠন ও দলের জেলা কমিটির নেতা ও বিধায়কদের নিয়ে প্রথম সভা করবেন শুভেন্দুবাবু। সভায় দলের জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা সভাপতিত্ব করবেন। সেখানে প্রায় ৭৫০জন নেতানেত্রী হাজির থাকবেন। সভা চলবে বেলা ২টা পর্যন্ত। নয়া নির্বাচনী বুথ কমিটি ও ভোটার তালিকা ধরে সংগঠনের ভিত যাচাই করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, জেলা কমিটির পদ আঁকড়ে বসে থাকা কিছু নেতাকে সর্বদা দলের কাজে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, কিছু এলাকায় দলীয় নেতাদের একাংশের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ। দল পরিচালনার ক্ষেত্রে গোষ্ঠী কোন্দলও রয়েছে। যা শুকিয়ে যাওয়া বিরোধী শিবিরে অক্সিজেন জোগাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। তাই এদিন দলে কোন্দল রোধ করতে ফের কড়া দাওয়াই দিতে পারেন শুভেন্দুবাবু। মধ্যাহ্ন ভোজের পর শুভেন্দুবাবু গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহকারী সভাপতি ও কর্মাধ্যক্ষ এবং জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে দ্বিতীয় সভা করবেন। এই সভায় সভাপতিত্ব করবেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি। সভায় ৮৪০জন উপস্থিত থাকবেন। আটটি পুরসভার ১৫০জন কাউন্সিলারকে নিয়ে তৃতীয় সভা করবেন শুভেন্দুবাবু। এই সভা পরিচালনার দায়িত্বে মুর্শিদাবাদ পুরসভার চেয়ারম্যান বিপ্লব চক্রবর্তী, ডোমকল পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমিক হোসেন ও বেলডাঙা পুরসভার চেয়ারম্যান ভরত ঝাওয়ারকে রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট দু’টি সভায় উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান, সরকারি সুযোগ-সুবিধা বাসিন্দাদের মধ্যে প্রদান করা, জনপ্রতিনিধিদের জনসংযোগ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানা গিয়েছে। সবশেষে নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য জেলা, মহকুমা ও ব্লক স্তরে নির্বাচনী কমিটিও গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
এদিকে, ওই কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে করতে তৃণমূলের জেলা কমিটি প্রস্তুতি শুরু করেছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ওই তিনটি সভার বিষয়ে যা বলার দলের জেলা পর্যবেক্ষক বলবেন। তবে, দলের জেলা পর্যবেক্ষকের নির্দেশে আমরা লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। এবার জেলার মাটি থেকে অধীরবাবুকে রাজনৈতিকভাবে উৎখাত করে ভাগীরথীর জলে ভাসিয়ে দেব। উল্লেখ্য, ওই সভার পর মার্চ মাসের মধ্যে জেলায় আরও কিছু কর্মসূচি পালন করবেন শুভেন্দুবাবু।
অন্যদিকে, প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মহফুজ আলম অবশ্য বলেন, লোকসভা ভোটে রাজনৈতিকভাবে অধীর চৌধুরীর সামান্য ক্ষতিও করতে পারবে না তৃণমূল। ধান্দাবাজ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি দলত্যাগ করলেও জেলাবাসী এখনও কংগ্রেসের সঙ্গে আছেন। তাছাড়া, গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরা এখন কংগ্রেসে শামিল হচ্ছেন।