গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ পাওয়ার সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
ওই বৃদ্ধার ভাইপো রফিকুল ইসলাম বলেন, একসময় পিসির বিয়ে হয়েছিল, ঘটনাক্রমে বেশ কয়েক বছর সংসার করার পর বাড়িতে ফিরে এসে আমার কাছেই থাকেন। তবে প্রায় সারামাসই এলাকার রোগীদের নিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে কিংবা নার্সিংহোমে দিন কাটান। এই কাজের বিনিময়ে কোনও পারিশ্রমিক নেন না। এমনকী, গ্রাম বা ভিনগ্রামের রোগীদের জন্য ৫-৭দিন ধরে রোগীর সঙ্গে থেকে সেবা করেন নিঃসঙ্কোচে। এপর্যন্ত প্রায় হাজার দু’য়েক রোগীকে তাঁদের সঙ্গে থেকে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে তবেই বাড়ি নিয়ে এসেছেন।
ওই বৃদ্ধা বলেন, আমার দাদার ছেলে একবার কানে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল। কাছেপিঠে ডাক্তার দেখিয়েও কোনওভাবে যন্ত্রণা কমেনি। তখন ভাইপোকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়িতে তেমন কেউ ছিল না। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে আমি নিজেই ওকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম। পলাশী স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে লোকের কাছে জানতে চাই, কোথায় কোন হাসপাতালে চিকিৎসা ভালো হয়। এমনভাবেই কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হওয়ার পর বাড়ি ফিরেছিলাম। ১৭বছর আগে সেই শুরু, তারপর আর থামিনি। এখন আমি রোগীর সঙ্গে ও রোগীর পাশে থাকি বলেই এলাকার মানুষ জানেন। সবাই ডাকে, মানুষের ভালোবাসা পাই।
হাঁসপুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা পেশায় গ্রামীণ চিকিৎসক বরুণ সিনহা বলেন, ওই বৃদ্ধা যেভাবে মানুষের সেবা করেন, তার জন্য ওঁর এই সেবামূলক কাজকে আমরা ‘সঙ্গীসাথী’ প্রকল্প বলে থাকি। এলাকার বাসিন্দা শামিম শেখ বলেন, কতদিন থেকে দেখে আসছি কৃষ্ণনগর, বহরমপুর, কলকাতা সব জায়গায় মানুষজনকে চিনিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান। হালিমা মণ্ডল বলেন, বয়স হয়েছে, শরীর আর আগেরমতো সায় দেয় না। কিন্তু, বাড়িতে এসে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বা কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলা বা অন্য কোনও মহিলা রোগীর সঙ্গে থাকতে বললে না করতে পারি না। নাকাশিপাড়ার বধূ সাকিনা বেওয়ার কথায়, লেখাপড়া না জানলেও শহরে যাতায়াতে তাঁর কোনও অসুবিধা হয় না। ট্রেনে ভিড় থাকলেও হালিমা মণ্ডলকে দেখলেই যাত্রীরা আসন ছেড়ে দেন। সঙ্গে থাকা রোগীরও বসার জায়গা করে দেন।