পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে জেলার প্রায় ৫০ হাজার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাইছে তৃণমূল। যদিও বিজেপির দাবি, ওসব করে শাসক দলের কোনও লাভ হবে না। ওদের পাপের টাকায় কেউ পরিষেবা নেবে না। তবে সিপিএম জানিয়েছে, তাদের ছাত্র সংগঠনও পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পাশে থাকবে।
তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, বীরভূমের প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে আমাদের ভলান্টিয়ার থাকবে। অভিভাবকদের চা, জল দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। পরীক্ষা যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় সবদিকেই তাদের নজর থাকবে। এভাবে লোকসভা ভোটের আগে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মন জয় করতে রাজনৈতিক ছক সাজানো শুরু করলেন তিনি।
গুড়-বাতাসার তত্ত্ব আওড়ানো অনুব্রতর সাংগঠনিক নৈপুণ্যতা স্বীকার করে বিরোধীরাও। বোর্ডের পরীক্ষার নিয়মাবলী মাথায় রেখে আগেভাগেই ব্লকে ব্লকে জনসভা সেরে ফেলেছেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই নেতা। বর্তমানে ‘ইনডোর’ কর্মী সম্মেলন করার পাশাপাশি পড়ুয়াদের জীবনে প্রথম বড় পরীক্ষাকে মাথায় রেখে সুকৌশলে প্রচার চালাতে চাইছেন তিনি।
গত শুক্রবার জেলা কমিটির বৈঠকে অনুব্রতবাবু কর্মীদের নিদান দিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যামিক পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে দলীয় কর্মীদের। পরীক্ষাকেন্দ্রের পাশে শিবিরে থাকা স্বেচ্ছাসেবকদের ব্যাজও প্রকাশ করা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ৩৪টি মেন সেন্টার সহ ১৩৯টি পরীক্ষাকেন্দ্রের অদূরে অস্থায়ী ক্যাম্পগুলি করা হবে। নীলসাদা সেই ছাউনিতে অভিভাবকদের বসার ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে পানীয় জল রাখা হবে। মাঝেমধ্যে চা বিতরণ করা হবে। কিছু নেতা আবার মিষ্টিরও ব্যবস্থা করছেন। পরীক্ষার্থীদের সমস্যার কথা ভেবে সেখানে পেন, জ্যামিতি বক্স রাখা হচ্ছে। টেনশনে অনেক সময় পরীক্ষার্থীরা সাময়িক অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া সহ যাবতীয় ব্যবস্থা করবে শাসক দলের ভলান্টিয়াররা। পরীক্ষার্থীদের রাস্তা পার হওয়া বা সেন্টারে পৌঁছতে সমস্যা হলেও এগিয়ে আসবে এই বিশেষ ব্যাজ পরা স্বেচ্ছাসেবকরা। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, প্রতিটি কেন্দ্রে ক্যাম্প করে এমন উদ্যোগ একেবারেই নতুন।
শাসকদল এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলে দাবি করলেও রাজনৈতিক মহলের মতে, এটাই অনুব্রত মণ্ডলের অন্যতম রণকৌশল। তিনি জানেন পুরো প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারলে জেলার ৪৬৭২৪ জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও ২৭৫৭৪ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরিবারের কাছে সহজেই শাসক দল পৌঁছতে পারবে। যার ফল মিলবে আসন্ন লোকসভা ভোটে। তবে বিজেপি জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, এসব করে কিছু হবে না। মানুষ ওদের আর সুযোগ দেবে না। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, আমাদের ছাত্র সংগঠনও ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা হলে সাহায্য করবে।
যদিও এই পরিষেবা প্রদানকে শিক্ষা মহল সদর্থকভাবেই দেখছে। তাঁদের দাবি, মাধ্যমিক হল জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। অচেনা পরিবেশে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে পড়ুয়াদের। সেখানে পরীক্ষার্থীরা যেমন চাপে থাকে তেমনি টেনশনে থাকেন অভিভাবকরাও। অনেক সময় সেন্টারের বাইরে অভিভাবকরা বসার জায়গাটুকুও পান না। পানীয় জল বা চা পান তো অনেক দূরের বিষয়। রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার প্রাপ্ত শিক্ষক কল্যাণ ভট্টাচার্য বলেন, এটা অবশ্যই শাসক দলের প্রশংসনীয় উদ্যোগ। অভিভাবকদের এতে বিশেষ সুবিধা হবে। মাধ্যমিক পরীক্ষার জেলা আহ্বায়ক প্রলয় নায়ক বলেন, পরীক্ষার্থীদের অসুবিধার বিষয়টি আমরা দেখি। অভিভাবকদের কথা কেউ ভাবলে ভালোই হয়।