পারিবারিক ঝামেলার সন্তোষজনক নিষ্পত্তি। প্রেম-প্রণয়ে শুভ। অতিরিক্ত উচ্চাভিলাষে মানসিক চাপ বৃদ্ধি। প্রতিকার: আজ দই খেয়ে ... বিশদ
লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে এমন লিফলেট রাস্তায় ছড়িয়ে থাকতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ঝাড়খণ্ড সীমানায় বসবাসকারী গ্রামের আদিবাসীরা। ভয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। সংবাদ মাধ্যমের সামনে একপ্রকার হাত জোড় করে তাঁরা বলছেন, এবিষয়ে আমাদের কোনও প্রশ্ন করবেন না। আমরা দিনমজুরের কাজ করে খাই। খুনোখুনি, হানাহানি হোক আমরা চাই না। এলাকার এক তৃণমূল কর্মী বলেন, দু-তিনদিন আগেই এই লিফলেট দেখেছি। কে বা কারা কখন সেগুলি ছড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে বলতে পারব না। তবে এর পিছনে বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে এটা পরিষ্কার।
অন্যদিকে, নশিপুর গ্রামের ষাটোর্ধ্ব এক আদিবাসী বলেন, এত বয়স হল, কোনওদিন এরকম সর্তকবার্তা দেওয়া লিফলেট দেখিনি। ভোট আসছে। সব রাজনৈতিক দলের নেতারা গ্রামে আসবেন। তাঁদের মিটিং মিছিলে হাজিরও হতে হবে। কী হবে, তা ভেবে এখন থেকেই ভয় লাগছে। এলাকার অনেকের হাতে হাতে এখন ওই লিফলেট ঘুরছে। আদিবাসী সমাজের বাইরে অনেকে হোয়াটস্ অ্যাপের মাধ্যমে পরিচিতদের সেই লিফলেট ছবি তুলে পাঠাচ্ছেন।
বীরভূম আদিবাসী গাঁওতার সম্পাদক সুনীল সোরেন বলেন, আদিবাসীদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতার অভাব রয়েছে। তবে মনে হচ্ছে এর পিছনে মাওবাদী নেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। শাসকদল বা বিরোধীরা হয়ত এই ধরনের লিফলেট ছড়িয়ে আদিবাসীদের অন্যদের থেকে আলাদা করে দেওয়ার চক্রান্ত করছে। যাঁরা রাজনীতি করেন তাঁরাই এটা দেখবেন। এব্যাপারে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম অবশ্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের শাসকদলের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন। তিনি বলেন, এটা এক ধরনের শাসক পার্টিরই রাজনীতি। তথাকথিত অরাজনৈতিক সংগঠন দিয়ে এসব করাচ্ছে তারা। বিরোধী দল বিশেষ করে বামপন্থীদের আদিবাসীদের থেকে বিচ্ছিন্ন করাই ওদের লক্ষ্য। গণতান্ত্রিক আন্দোলন থেকে মানুষকে দূরে সরিয়ে রাখার পরিকল্পনা। এর পিছনে কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের শাসকদলের হাত রয়েছে বলে তাঁর দাবি।
বিজেপি অবশ্য কেন্দ্রের চক্রান্তের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের জেলা সহ সভাপতি স্বরূপরতন সিনহা বলেন, রাজ্যের শাসকদল তাদের অভিসন্ধিপূরণের জন্য আদিবাসী গ্রামগুলিতে লিফলেট ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করতে চাইছে। এটা সুপরিকল্পিত চক্রান্ত ছাড়া কিছুই নয়। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, যারা এই অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল অবশ্য ঘটনায় বিজেপিরই হাত রয়েছে বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, এর পিছনে বিজেপি রয়েছে। ওদের লক্ষ্য সফল হবে না। এদিনই তিনি সংগঠনের আদিবাসী সেলের নেতাদের বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে নলহাটি থানার পুলিস জানিয়েছে, গোপনে কেউ এই লিফলেট ছড়াচ্ছে। তাদের ধরতে পুলিস সক্রিয় হয়েছে।