বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
গত কয়েকদিন ধরে মেমারি-২ ও মন্তেশ্বর ব্লক এলাকায় গোয়ালঘর থেকে গোরু চুরি হয়ে যাচ্ছিল। শনিবার গভীর রাতে মন্তেশ্বরের ময়নামপুরে আব্দুল আলিম মণ্ডলের গোয়াল থেকে চারটি গোরু চুরি করে একটি ছোট ট্রাকে চাপিয়ে নিয়ে পালাচ্ছিল কয়েকজন দুষ্কৃতী। গোরুচোররা কুসুমগ্রাম- মন্তেশ্বর রোড ধরে মেমারির দিকে আসছিল। রাত আড়াইটে নাগাদ গোরু বোঝাই ট্রাকটিকে দেখতে পায় পুলিস। সাতগেছিয়ার কাছে পুলিস গাড়িটিকে দাঁড় করানোর জন্য ইশারা করে। তা অগ্রাহ্য করে গতি বাড়িয়ে ট্রাক নিয়ে পালায় চালক। সাতগেছিয়া ক্যাম্পের পুলিস ট্রাকটির পিছু নেয়। মেমারি দিয়ে তারা জিটি রোড ধরে রসুলপুরে চলে আসে। কিন্তু, রেলগেট পড়ে যাওয়ায় সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে ফের মেমারির দিকে পালায়। মেমারি রেলগেট খোলা পেয়ে জিটি রোড ধরে সোজা পাণ্ডুয়ার দিকে যায় গোরুচোররা। পুলিসও পিছু ধাওয়া করে। বেগতিক বুঝে কালসি গ্রামের কাছে গোরুচোররা পুলিসকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে। তাতে কনস্টেবল সন্দীপকুমার পাল জখম হন। পুলিস গুলি চালাতে শুরু করে। গোরুচোররাও পাল্টা গুলি চালায়। একটি গুলি পুলিসের গাড়ির বনেটে লাগে। প্রায় ১০ রাউন্ড গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিস পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। পুলিসের গুলিতে সামিম খান (২৫)জখম হয়। তার পিছনে গুলি লাগে। এরপর হুগলির পাণ্ডুয়া থানার সিমলাগড় রেলগেটের কাছে গোরুচোররা ট্রাকটি থামায়। সামনে বসে থাকা ৪-৫ জন গোরুচোর ট্রাক থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালায়। ট্রাকের কাছে পৌঁছে পুলিস জখম সামিম ও গুড্ডুকে ধরে। গুলিবিদ্ধ সামিমকে মেমারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। সকাল ৮টা ২০ নাগাদ সে মারা যায় বলে জানা গিয়েছে।
ধৃতের কাছ থেকে দু’টি পাইপগান, একটি ব্যবহৃত কার্তুজ, ৪টি তাজা বোমা, ভোজালি উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিসের দাবি। চুরি করা ৪টি গোরুও উদ্ধার হয়েছে। কয়েকটি মোবাইল ও ধৃতদের ব্যবহৃত গাড়িটি পুলিস বাজেয়াপ্ত করেছে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম সামিম খান। তার বাড়ি দক্ষিণ ২৪পরগনার মগরাহাট থানার মইতলায়। বর্ধমান জেলা আদালতের চতুর্থ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রঞ্জনী কাশ্যপ হাসপাতালে গিয়ে মৃতের সুরতহাল করেন। সেইসময় এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটও উপস্থিত ছিলেন। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তার মৃত্যুর বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। ধৃতের নাম গুড্ডু মোল্লা ওরফে ভুটু। মগরাহাট থানার বীরেন্দ্রপুরে তার বাড়ি। রবিবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। ধৃতের হয়ে কোনও আইনজীবী এদিন দাঁড়াননি। গুড্ডুকে পাঁচ দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম।