বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, দ্বারকেশ্বর নদের চরে রয়েছে কেঞ্জাকুড়া মহাশ্মশান। ওই শ্মশানে সঞ্জীবনী মাতার মন্দির আছে। প্রতিবছর মকর সংক্রান্তির দিন দেবীর পুজো শুরু হয়। চারদিন ধরে পুজো-পাঠ চলে। শেষদিন ধুলটের আয়োজন করা হয়। এদিন সেখানে ধুলট ছিল। প্রতিবছর এই দিনটিতেই বসে মুড়ি মেলা। এদিন সকাল থেকে দ্বারকেশ্বর নদের তীরবর্তী কেঞ্জাকুড়া, মোলবোনা, শালডিহা, মাঝকানালি, কমলপুর, কালপাথর প্রভৃতি গ্রামের মানুষ সাইকেল, বাইক সহ বিভিন্ন যানবাহনে সওয়ার হয়ে মেলাপ্রাঙ্গণে হাজির হন। নদীর দু’পাশের মাঠের আলপথ ধরে অনেককেই হেঁটে মেলার দিকে যেতে দেখা যায়। আট থেকে আশি সকলে দ্বারকেশ্বর নদে চরে নামেন। এদিন বেলা ১১টা নাগাদ দ্বারকেশ্বর নদীগর্ভ কার্যত কালো মাথায় ভরে যায়। সকলেই কমবেশি সঙ্গে করে মুড়ি নিয়ে মেলা চত্বরে পৌঁছন। মুড়ির সঙ্গে খাওয়ার জন্য তেলেভাজা, শশা, টোম্যাটো সহ অন্যান্য খাবারদাবারও ছিল। এদিন সর্বত্র ছিল পিকনিকের আবহ। নদের চরে বিভিন্ন জায়গায় একসঙ্গে আসা লোকজনকে গোল করে বসে থাকতে দেখা যায়। মুখোরোচক খাবার সহযোগে মুড়ি খেয়ে তাঁরা বাড়ি ফেরেন। গামছায় মুড়ি মাখিয়ে সকলকে ভাগ করে খেতে দেখা যায়। কেউ কেউ শালপাতায় মুড়ি নিয়ে খান। তবে মেলায় আসা লোকজন দ্বারকেশ্বরের চরে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ফেলে রাখায় এদিন দূষণ ছড়ায়।
পুরুলিয়ার কাপড়গলির বাসিন্দা মৌসুমি কর্মকার স্বামীর সঙ্গে মুড়ি মেলায় হাজির হন। মৌসুমিদেবী বলেন, কেঞ্জাকুড়ায় আমার বাপেরবাড়ি। ছোট থেকে মুড়ি মেলায় যাতায়াত রয়েছে। ফলে মেলার প্রতি টান আজও রয়ে গিয়েছে। মেলার দিনে দ্বারকেশ্বর চরে গামছা পেতে মুড়ি না খেলে মন ভরে না।
ছাতনার শুশুনিয়ার বাসিন্দা তারা তন্তুবায়, অপর্ণা দাস বলেন, আমরা ছোট গাড়ি ভাড়া করে মেলায় এসেছি। প্রতি বছর মুড়ি মেলায় যোগ দিই।
পুজো এবং মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, প্রায় ৫০বছর ধরে মুড়ি মেলা চলে আসছে। প্রতিবছর ৪ মাঘ দ্বারকেশ্বর নদের চরে মেলা বসে।
তবে এদিন কলকাতায় তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশ থাকায় মেলার ভিড় কিছুটা কম ছিল বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। মেলায় পসরা সাজিয়ে বসা গৌতম মণ্ডল বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ভিড় কম ছিল। ফলে বিক্রিবাটাও তুলনায় কিছুটা কম হয়েছে।