বিমাসূত্রে ধনাগম হতে পারে। প্রেম-প্রণয়ে আনন্দ। কাজকর্মে অগ্রগতি ও সুনাম। ... বিশদ
উৎসবের উদ্যোক্তা তথা ভাস্কর্য শিল্পী তাপস দাস বলেন, ফ্রান্স থেকে শান্তিনিকেতনে আসার সুবাদেই আমার সঙ্গে ওই দম্পতির পরিচয় হয়। বাংলার লোকগান ওই দম্পতির খুব ভালো লাগে। তাই এই উৎসবের কথা শুনেই তাঁরা এখানে এসেছেন।
কেতুগ্রাম-২ ব্লকের বেগুনকোলা গ্রামটি কাটোয়া শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা অজয় নদের ধারে অবস্থিত। এবারই প্রথম শুরু হয়েছে এই অজয় পরব। এই গ্রামেই তাঁবু খাটিয়ে দু’দিন ধরে চলবে লোকগানের আসর। বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকশিল্পীরা এসে এদিন রাতভর মাটির গানে মাতিয়ে রাখেন গোটা বেগুনকোলা গ্রামকে। ফ্রান্সের বাসিন্দা প্যাস্কল ফ্রান্সডি বলেন, আমি ওয়ার্ল্ড ফটোগ্রাফির কাজ করি। তাই ছবির নেশায় অনেক দেশে ঘুরি। ফ্রান্সে বসেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা পড়ে বুঝতে পারি যে, বাংলাকে চিনতে হলে ফ্রান্সে বসে থাকলে হবে না। তাই যখন প্রথমবার শান্তিকেতনের পৌষমেলায় এসেছিলাম, তখনই বাংলার লোকগানের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ি। তারপরে অজয় পরব উৎসবের কথা শুনে এখানে এসেছি। আমার স্ত্রীও লোকগানের ফ্যান। তাই তিনিও আমার সঙ্গে এসেছেন।
উৎসব কমিটির সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলায় একসময় যে নদীমাতৃক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, তা এখন ক্রমশ হারিয়ে যেতে বসেছে। নদী সংরক্ষণের জন্য সচেতনতা দরকার। তাই অজয়ের তীরে বেগুনকোলা গ্রামে এই প্রথম অজয় পরবের আয়োজন করা হয়েছে। উৎসব কমিটির সদস্য তথা কাটোয়া মহকুমার ইতিহাস গবেষক রণদেব মুখোপাধ্যায় বলেন, নদ-নদী আমাদের অনেক দিয়েছে। কিন্তু আমরা সেভাবে নদীকে কিছু দিতে পারিনি। তাই নদীকে ভালোবেসে মাটির গানের টানে আমরা এই উৎসবের আয়োজন করেছি।
এদিন সকাল থেকেই লোকশিল্পীরা নৌকা করে অজয়ের তীরবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দাদের ফকিরি গানের সুরে ভাসিয়ে নিয়ে যান। সারারাত ধরে তাঁবুর ভিতরে চলে গান। এবার লোকশিল্পীদের ২০টি তাঁবু হয়েছে। তাপসবাবু বলেন, বাংলার হারিয়ে যেতে বসা সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনতেই আমরা দিনরাত এখানে লোকগানের আসর বসিয়েছি। মাটির গানের টানে কাটোয়া শহর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বহু গ্রামের মানুষ এই উৎসবে যোগদান করেছেন। এমনকী কলকাতা থেকেও অনেকে এই উৎসবে যোগ দিয়েছেন। কলকাতার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম, মিতা বসু বলেন, নদের তীরে এরকম পরিবেশে মাটির গান শোনার অনুভূতি একেবারেই অন্যরকম। প্রতিবছরই এই অনুষ্ঠানে আসার চেষ্টা করব। কাটোয়ার চূড়পুনি গ্রামের বাউল শিল্পী নিতাই দাস বলেন, খুবই ভালো উদ্যোগ। এখানে গান গাইতে পেরে খুবই খুশি।