বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
১৬ জানুয়ারি রাজ্যের অর্থ দপ্তরও প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়ায় চাষিদের টাকা পাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। এই উদ্যোগের জেরে লোকসভা ভোটের আগে শাসকদল বাড়তি সুবিধা পাবে বলে রাজনৈতিক মহলের মত।
কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা যত দ্রুত সম্ভব, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করব। ইতিমধ্যেই প্রকল্প চালু করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে।
৩১ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকবন্ধু প্রকল্প ঘোষণা করেন। সেই ঘোষণা লোকসভা ভোটের আগে বাস্তবায়িত করতে উঠেপড়ে লেগেছে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্প অনুযায়ী, কৃষিকাজের জন্য খরিফ ও রবি বা বোরো চাষের সময় মোট দু’বার রাজ্য সরকার ক্ষুদ্র, প্রান্তিক ও ভাগ চাষিদের জমির পরিমাণ অনুযায়ী ন্যূনতম এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থসাহায্য দেবে। খরিফ চাষের ক্ষেত্রে জুন মাসে ও রবি বা বোরো চাষের ক্ষেত্রে নভেম্বর মাসে এই সাহায্য দেওয়া হবে। কিন্তু, কৃষকদের অর্থসাহায্য করার জন্য জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে নারাজ রাজ্য সরকার। তাই চলতি রবি মরশুমের অর্থসাহায্য ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রকল্পটি চালু হলে ১৮ থেকে ৬০ বছরের কোনও কৃষকের মৃত্যু হলে ২ লক্ষ টাকা অর্থ সাহায্য পাবে তাঁর পরিবার। এদিকে সামনের মাসেই প্রকল্প চালু করতে নাওয়া-খাওয়া উধাও হয়ে গিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় চাষিদের চিহ্নিতকরণ করছে কৃষিদপ্তর।
এই প্রকল্পে একদিকে কৃষকরা যেমন উপকৃত হবেন, অন্যদিকে এর সঙ্গে সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে যুক্ত করে তাদের আরও শক্তিশালী করতে চাইছে রাজ্য সরকার।
কৃষিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, রাজ্যের ৯৬ শতাংশ চাষিই এই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারেন। ফলে এর সঙ্গে সমবায় ব্যবস্থারও আমূল পরিবর্তন আসতে চলেছে। বিশেষভাবে উপকৃত হবে বীরভূম। জেলার উপকৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) সমীরকুমার ঘোষ বলেন, আমাদের জেলার ২ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৬জন কৃষক এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছেন। এঁরা সবাই সরাসরি জেলার সমবায় ব্যাঙ্কগুলির শাখার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন।
প্রসঙ্গত, করুণ অবস্থা কাটিয়ে বীরভূম জেলার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক ক্রমশ তারা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এই প্রকল্প তাদের হাতে আসায় সেই কাজে বিশেষ সহায়ক হবে।
সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সমবায় ব্যাঙ্কের উপর আস্থা রেখেছেন। এতে রাজ্যের সমবায় ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, এতে আমাদের খুবই উপকার হবে।
যদিও এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে বিশেষ ফায়দা পাবে তৃণমূল কংগ্রেস। বিশেষ করে লোকসভা ভোটের আগেই এক কিস্তি টাকা কৃষকদের ঘরে পৌঁছে দিয়ে প্রকল্পটির ঢালাও প্রচার চালাতে চায় রাজ্যের শাসকদল। যার জেরে বিরোধীদের কৃষক ভোটব্যাঙ্ক হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা প্রবল।