রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
জামবনী ব্লকের জামবনী গ্রাম পঞ্চায়েতের শুষনি গ্রামে প্রায় ৯৫টি পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে ৭০টি মাহাত ও ২৫টি শবর পরিবার রয়েছে। যদিও এই গ্রামে কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। গ্রামে শুধুমাত্র একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গ্রামে স্কুল তৈরির জন্য দু’বছর আগে প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। জায়গাও দিতে প্রস্তুত ছিল গ্রামবাসীরা। কিন্তু, আজ পর্যন্ত স্কুল তৈরি হয়নি। অথচ শিক্ষার অধিকার আইনে রয়েছে, গ্রামের এক কিলোমিটারের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকতে হবে।
গ্রামে স্কুল না থাকায় শুষনি থেকে দু’-তিন কিলোমিটার দূরে জঙ্গল পথ পেরিয়ে খুদে পড়ুয়াদের কুমরী গ্রামের স্কুলে যেতে হয় প্রতিদিন। এই এলাকা দিয়ে দলমার হাতির পাল যাতায়াত করে। এখনও হাতির পাল এই রুটেই রয়েছে। বনদপ্তর সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ড সীমানার জামবনী ব্লকে দলমার হাতির পাল রয়েছে। এছাড়া রয়েছে নেকড়ের উৎপাত। সপ্তাহখানেক আগে পার্শ্ববতী বাঁকশোল গ্রামে দু’জনকে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছিল নেকড়ে। তাঁরা এখনও ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারপর থেকেই খুদে পড়ুয়াদের আতঙ্ক বেড়েছে। শুধুমাত্র পড়ুয়ারা নয়, বন্যজন্তুর আতঙ্ক তাড়া করছে সাধারণ মানুষকেও।
অভিভাবক ফটিক মাহাত, সরস্বতী মাহাত বলেন, আমরা কাজের মানুষ। প্রতিদিন তো বাচ্চাদের স্কুলে দিয়ে আসা সম্ভব নয়। বাচ্চারা হেঁটে স্কুলে যায়। হাতি ও নেকড়ের ভয়ে ওরা একা যেতে চাইছে না। প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী ডালিয়া মাহাত, ভবেশ মাহাত, অর্পণা মাহাত, দ্বিতীয় শ্রেণির পূজারানি মাহাত, তৃতীয় শ্রেণির জয়কিশোর মাহাত, চতুর্থ শ্রেণির উমা মাহাত বলে, জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতে খুবই ভয় করে। জঙ্গলে হাতি থাকে। মাঝে মধ্যে কুকুর চিৎকার করে। অনেকে বলছে, জঙ্গলে নেকড়ে রয়েছে। আমরা যখন স্কুলে যাই, সবাই একসঙ্গে হাত ধরে যাই।
জানা গিয়েছে, গিধনি পূর্ব চক্রের কুমরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ৪২। গত এক সপ্তাহ ধরে স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি কমছে। বৃহস্পতিবার স্কুলে গিয়েছিল মাত্র ২০জন। গ্রামবাসী তারক মাহাত, মনোজ মাহাত, জিতেন মাহাত বলেন, কুমরীর জঙ্গলে প্রায়ই হাতি বের হয়। তারপর আবার পাশের বাঁকশোল গ্রামে নেকড়ে বেরিয়েছিল। যার ফলে বাচ্চাদের পাশাপাশি আমরাও ভয়ে রয়েছি। আমাদের গ্রামে ৪৫জন পড়ুয়া রয়েছে। জঙ্গল পেরিয়ে স্কুল যেতে হয় তাদের। হাতির ভয়ে ন’জন পড়ুয়া আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করে। বাকিরা সবাই কুমরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) তথা জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান শুভাশিস মিত্র বলেন, এরকম হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হেলোইচ্চি বলেন, ওই জঙ্গলে এখন হাতি নেই। তবে নেকড়ে সচরাচর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে মানুষকে কামড়ায় না। ভয় দূর করতে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।