রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে বুধবার ভোর ৩টে নাগাদ রামপুরহাট হাসপাতালে চিকিৎসক অজয় মণ্ডলের অধীনে ভর্তি হন নলহাটির বানিওর গ্রামের মায়া কোনাই। সেই সময় চিকিৎসক প্রসূতিকে দেখে বলেন, কিছুক্ষণ পরে স্বাভাবিক প্রসব করানো হবে। বেবি ভালো আছে। বিকেলের দিকে রোগীকে দেখে একইভাবে স্বাভাবিক প্রসবের আশ্বাস দেন ওই চিকিৎসক। প্রসূতির মা অনিমা কোনাই বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে মেয়ে ফের প্রচণ্ড প্রসব যন্ত্রণায় ভুগতে থাকে। সেই সময় ওকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, রুমের ভিতরে না ঢুকিয়ে বাইরে প্রায় একঘণ্টা ধরে ফেলে রাখা হয়। সেই সময় ওখানে কেউ ছিল না। মেয়ে যন্ত্রণায় এতটাই ছটপট করছিল যে, আমার পক্ষে একা তাঁকে সামলানো অসম্ভব হয়ে পড়ছিল। পরে রাত ৮টা নাগাদ চিকিৎসক এসে জানান, সিজার করতে হবে। সেই মতো অপারেশন থিয়েটারে মেয়েকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পরে চিকিৎসক বেরিয়ে এসে বলেন, শিশুপুত্র গর্ভেই মারা গিয়েছে।
প্রসূতির স্বামী গাজু কোনাই বলেন, সিজার করতে হলে চিকিৎসক আমাদের আগে জানাতে পারতেন। এভাবে গোটা দিন ধরে স্ত্রীকে বেডে ফেলে রাখা হল কেন? এটা গাফিলতি ছাড়া আর কী? তাঁর অভিযোগ, চিকিৎসকের গাফিলতিতেই গর্ভে ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তিনি চিকিৎসকের শাস্তির দাবি করেছেন। এদিন মৃত শিশুকে কোলে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে প্রসূতির পরিবার। প্রসূতির বাবা রাজকুমার কোনাই বলেন, মেয়ে গর্ভবতী হওয়ার পর থেকেই বাড়িতে খুশির হাওয়া বইছিল। কিন্তু, নাতি পৃথিবীর আলো দেখার আগেই চিকিৎসকের গাফিলতিতে মারা গেল।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক অজয় মণ্ডল বলেন, বেবির অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এর বাইরে কিছু বলব না। যা বলার ডেপুটি সুপারকে জানিয়েছি। ডেপুটি সুপার শর্মিলা মৌলিক বলেন, রোগীর পরিবারের অভিযোগ পেয়েছি। কোনও জায়গায় গাফিলতি রয়েছে কিনা দেখা হচ্ছে। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।
এই হাসপাতালে এর আগেও চিকিৎসকের গাফিলতিতে একাধিক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। যার জেরে বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু, অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। যথেষ্ট পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও কেন বারবার চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ উঠছে? এ ব্যাপারে ডেপুটি সুপার বলেন, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হওয়ার পর থেকে চিকিৎসকরা ইউনিট হিসেবে কাজ করছেন। কোথাও তো গাফিলতি হচ্ছেই। আমার নজরেও এসেছে বেশ কিছু গাফিলতি। তিনি বলেন, যতদিন জেলা হাসপাতাল ছিল, ততদিন আমি স্বাধীনভাবে কাজ করেছি। কিন্তু, এখন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হয়েছে। আমার উপরে প্রিন্সিপাল ও এমএসভিপি আছেন। সব জায়গায় আমি অবাধে কাজ করতে পারছি না। অন্যদিকে, রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ঘটনার তদন্ত করার জন্য ডেপুটি সুপারকে বলা হয়েছে। গাফিলতি থাকলে নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।