বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
জেলা উপকৃষি অধিকর্তা প্রশাসন আশিসকুমার বেরা বলেন, কিছু চাষির সঠিক কাগজপত্র নেই। যা কাগজপত্র লাগবে, তা নতুন করে নিয়ে আবেদনপত্রের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। কেউ বঞ্চিত হবেন না। যাঁরা এই অল্প সময়ের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিতে পারেননি, তাঁদের জন্য সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এই বিষয়টি আমাদের হাতে নেই।
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৫ ডিসেম্বর রাজ্য সরকারের তরফে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানো হয়, ২০১৮ ’১৯ রবি মরশুমে বাংলা ফসল বিমা যোজনায় নাম নথিবদ্ধ করার জন্য ৩১ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। বোরো ধান চাষ ছাড়াও ভুট্টা, মুগ, তিল, বাদাম, গম, ছোলা, মুসুর, সর্ষে, আলু ও আখচাষের জন্য বিমা করা যাবে। ফসলবিমা যোজনায় নাম নথিবদ্ধ করার জন্য ঋণ নেই এমন চাষিদের ব্যাঙ্ক পাসবই, আধার কার্ড ও ফসল রোপনের শংসাপত্র জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু এই সাতদিনের মধ্যে অফিস খোলা ছিল মাত্র চারদিন। ফলে সিংহভাগ চাষি ফসল রোপনের শংসাপত্র জমা দিতে পারেননি। সিংহভাগ ক্ষেত্রে সময় কম থাকার অজুহাত দিয়ে বিমা কোম্পানিগুলিও গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লকে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করেনি বলে অভিযোগ। তার ফলে বহু চাষি ফসলবিমার বিষয়ে কিছুই জানতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে কৃষি দপ্তর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেসব চাষি চারা রোপনের শংসাপত্র ছাড়া আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন, সেক্ষেত্রে কৃষি দপ্তর নতুন করে শংসাপত্র সরাসরি আবেদনপত্রে ঢুকিয়ে দেবে। কারণ, এই শংসাপত্র ছাড়া প্রকল্পে নাম নথিবদ্ধ হবে না। কিন্তু আবেদন না করা চাষিদের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার নতুন করে সময়সীমা না বাড়ালে তাঁরা এবার এই প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
কোলাঘাটের সিদ্ধা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর জিঞাদা গ্রামের কৃষক তপন মাইতি বলেন, এবছর তিন বিঘা জমিতে বোরো চাষ করছি। আমি ফসল বিমার বিষয়টি জানতেই পারিনি। পরে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, গ্রামের সিংহভাগ চাষি আবেদন জমা দিতে পারেননি। খন্যাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের বক্সিতলা গ্রামের বাসিন্দা তথা অ-ঋণী চাষি মোহন দাস বলেন, বিঘা দেড়েক জমিতে বোরো ধানের চাষ করছি। কিন্তু ফসল বিমার বিষয়ে পঞ্চায়েত থেকে কিছু জানানো হয়নি। তাই আমার মতো গ্রামের কোনও অ-ঋণী চাষি ফসল বিমা প্রকল্পে আবেদন করতে পারেননি।
কৃষক সংগ্রাম পরিষদের জেলা সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, শুধু কাগজে বা টিভিতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হলেও পঞ্চায়েত, কৃষিদপ্তর ও বিমা কোম্পানির তরফে প্রচার না করায় জেলার হাজার হাজার চাষি ফসল বিমার বিষয়টি জানতে পারেনি। অবিলম্বে সময়সীমা বাড়ানোর দাবিতে সর্বস্তরে আবেদন জানানো হয়েছে।