গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
স্থানীয় ও ভূমি সংস্কার দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পুরুলিয়া পুরসভা এলাকার একাংশ সহ জেলার অধিকাংশ ব্লক এলাকাতেই রেকর্ড সংশোধনের জন্য আপত্তি দাখিলের কাজ শুরু হয়েছে। ভূমি সংস্কার দপ্তরের জমির রেকর্ডের ড্রাফ্ট পাবলিকেশন দেখে অনেকেই নিজেদের মালিকানাধীন জমি রেকর্ডের জন্য আবেদন জানাচ্ছেন। সেই আবেদন পত্রে অন্যান্য কাগজপত্রের সঙ্গে ৭৫পয়সার কোর্ট ফিও সাঁটতে হচ্ছে আবেদনকারীদের। ওই স্ট্যাম্পের চাহিদা বাড়তেই এক টাকার স্ট্যাম্প ১০ গুণ বা তারও বেশি দামে গ্রাহকদের কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
পুরুলিয়া শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মুসলেউদ্দিন মোল্লা, শহরের রানিবাঁধ এলাকার বাসিন্দা শেখ জানি বলেন, জেলা আদালত চত্বরে ভেন্ডারদের কাছ থেকে এক টাকার স্ট্যাম্প ১০টাকায় লাইন দিয়ে কিনতে হয়েছে। ১০গুণ টাকা দিয়েই ওই ভেন্ডারের মেজাজ সহ্য করতে হয়েছে। এক টাকার কোর্ট ফি কেউ সঠিক দামে কিনতে পেরেছেন বলে মনে হয় না। দরকার ছিল তাই বেশি দামেই কিনতে বাধ্য হয়েছি।
শহরের চিড়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা রাজু বাউরি বলেন, পুরসভা চত্বরেই তো ওই স্ট্যাম্প নিয়ে অনেকে বসে রয়েছেন। জমির রেকর্ডের ফর্ম পূরণ করে দেওয়ার জন্য ১০০টাকা এবং এক টাকার কোর্ট ফির স্ট্যাম্পের জন্য দিতে হয়েছে ১০টাকা। পুরুলিয়া জেলা আদালত চত্বরেও চলছে এই কালোবাজারি। সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ভেন্ডাদেরও একাংশ বেশি দামি ওই স্ট্যাম্প বিক্রি করছেন।
এবিষয়ে পুরুলিয়া জেলা আদালতের আইনজীবী কমল মিশ্র বলেন, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের জমি সংক্রান্ত কাজ ছাড়াও আদালতের বিভিন্ন খুঁটিনাটি কাজে বিভিন্ন মূল্যের কোর্ট ফি লাগে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেশি দামেই তা কিনতে হয়। সরকারি ওই স্ট্যাম্পকে ঘিরে কালোবাজারি রুখতে প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে হবে।
এবিষয়ে পুরুলিয়া জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতুল মাহাত বলেন, ১০গুণেরও বেশি দাম নেওয়ার ব্যাপারটা শুনেছি। এবিষয়ে ভেন্ডারদের সতর্ক করা হয়েছে। তাঁরা চড়া দামে বিক্রি বন্ধ না করলে জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও এবিষয়ে কথা বলব।
এবিষয়ে এক ভেন্ডার জন্মেঞ্জয় মাহাত বলেন, জমির রেকর্ডের কাজ শুরু হওয়ায় আচমকা কোর্ট ফি স্ট্যাম্পের চাহিদা বেড়েছে। অন্য ভেন্ডাররা কী করছে আমি বলতে পারব না। তবে আমি বেশি দামে স্ট্যাম্প কাউকে বিক্রি করিনি। অনেকে আমার কাছ থেকে বেশি সংখ্যায় কিনে রেখে দিয়ে ৫টাকা বা ১০টাকায় ওই স্ট্যাম্প বিক্রি করছে। এতে আমার কী করার আছে?
এবিষয়ে জেলার ট্রেজারি অফিসার তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, কোর্ট ফি স্ট্যাম্প না পেয়ে কোনও ভেন্ডার ফিরে গিয়েছেন এমন ঘটনা নেই। বেশি দামে কোর্ট ফি বিক্রি সম্পূর্ণ বেআইনি। তবে এবিষয়ে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ কেউ করেনি।
এবিষয়ে পুরুলিয়ার জেলাশাসক অলকেশ প্রসাদ রায় বলেন, বিষয়টি শুনেছি। স্ট্যাম্পের চাহিদা অনুযায়ী জোগান খানিকটা কম থাকায় সমস্যা হয়েছিল। তবে দু’-একদিনের মধ্যেই সমস্যা মিটে যাবে।