গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
এ ব্যাপারে উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা বলেন, যেসব কলেজ কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিয়েছে, সেইসব কলেজের এনরোলমেন্ট করা শুরু হয়েছে। গোটাটাই একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে চলছে। তবে, এজন্য কেউ টাকা চাইলে সেক্ষেত্রে কলেজগুলিকে আমার কাছে অভিযোগ জানাতে পরামর্শ দিচ্ছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবরকম দুর্নীতি উপড়ে ফেলতে চাইছি।
এনরোলমেন্ট আটকে থাকায় বিএড পড়ুয়াদের মতো চোখে ঘুম নেই কলেজ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্তাব্যক্তিদের। বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি বিএড কলেজের কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটি ক্যাম্পাসে যান। দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের সঙ্গে একটি সংগঠনের কর্মকর্তারা কথা বলার পর প্রায় ৩০টি কলেজের কর্মকর্তা এনরোলমেন্ট লিস্ট জমা দেন। অপর একটি বিএড কলেজ মালিক সংগঠনের কর্মকর্তারা ‘বিশেষ শর্ত’ পূরণ করার ব্যাপারে বেঁকে বসায় তাঁদের কলেজের লিস্ট জমা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে আচমকা ৪০-৫০জন এসে তাঁদের ঘিরে ধরেন। কোনওরকমে সেখান থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে তাঁরা ফিরে যান। ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া ও হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকায় ১৪৮টি সেল্ফ ফিনান্সিং বিএড কলেজ রয়েছে। সব মিলিয়ে আসন সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৪হাজার। এবছর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মাত্র আড়াই হাজার ছাত্রছাত্রী কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে বিএ কলেজগুলিতে পাঠিয়েছিল। ফাঁকা আসনে ম্যানেজমেন্ট কোটায় ছাত্র ভর্তি নিয়েছিল বিএড কলেজগুলি। ম্যানেজমেন্ট কোটায় ইচ্ছেমতো ছাত্রভর্তির ঘটনায় এনরোলমেন্ট আটকে দেওয়ার পরিকল্পনা নেয় বিশ্ববিদ্যালয়। নভেম্বর মাসে ইসি-র বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যার ফলে আটকে যায় এনরোলমেন্ট প্রক্রিয়া।
গত ২৪ডিসেম্বর এগজিকিউটিভ কাউন্সিল(ইসি)-র বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর কলেজগুলি এনিয়ে ক্ষমা চাইলে এবং ভবিষ্যতে এরকম ভুল হবে না, এই মর্মে মুচলেকা দিলে তবেই এনরোলমেন্ট করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। ৩১ডিসেম্বর তার রেজ্যুলিউশন কপি পরীক্ষা নিয়ামকের অফিসে এসে পৌঁছয়। তারপরও এনরোলমেন্ট আটকে রয়েছে। ‘বিশেষ শর্ত’ পূরণ করে কিছু কলেজ এনরোলমেন্ট করালেও শতাধিক কলেজে এখনও তা হয়নি।
এনসিটিই-র ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে সেকেন্ড সেমেস্টারের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। অথচ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ১৪৮টি সেল্ফ ফিনান্সিং বিএড কলেজে এখনও ফার্স্ট সেমেস্টারের ক্লাস চলছে। ফার্স্ট সেমেস্টারের সঙ্গে থার্ড সেমেস্টারের পরীক্ষা হয়। তাদেরও পরীক্ষা আটকে রয়েছে। অথচ বিএড কলেজগুলিকে নিয়ে গঠিত বিশ্ববিদ্যালয়(ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব টিচার্স ট্রেনিং এডুকেশন প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) এর আওতায় থাকা সমস্ত কলেজে ফার্স্ট সেমেস্টারের পরীক্ষা ডিসেম্বরেই শেষ হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত বিএড কলেজগুলি বালিগঞ্জে অবস্থিত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে গিয়েছে।
১৪৮টি বিএড কলেজের মধ্যে প্রায় সবক’টি কলেজ ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিয়েছে। ইসি-র বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওইসব চিঠি খতিয়ে দেখার পর এনরোলমেন্ট করানো হবে। এখন প্রশ্ন, চিঠি পাওয়ার পরও কেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এনরোলমেন্ট করাচ্ছে না? এর অন্তর্নিহিত রহস্য কী? এনরোলমেন্টের পর রেজিস্ট্রেশন তারপর ফর্ম ফিলআপ এবং সবশেষে অ্যাডিমিট তৈরি এবং হাতে পাওয়া, গোটাটাই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এই অবস্থায় এনরোলমেন্ট ঝুলে থাকলে পরীক্ষা হবে কবে? তাছাড়া এনসিটিই-র রুলস মেনে গোটা দেশে একটা রুটিন মানা হলেও সেখানে ব্যতিক্রম হয়ে রইল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। এমনটাই অভিযোগ উঠছে। এক্ষেত্রে এনসিটিই-র কোনওরকম কড়া পদক্ষেপ নিলে তার দায় কে নেবে সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।