বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
পশ্চিম কুস্তরিয়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত চাষি দীপক সাহা বলেন, আমার বাড়ির পিছনের জমিতে সাত বিঘা জমির ধান কেটে রাখা হয়েছিল। একই জায়গায় আমার ভাই দুলাল সাহার তিন বিঘা জমির ধান ছিল। বুধবার রাতে মজুরদের সঙ্গে নিয়ে ধান ঝাড়ার জন্য গিয়ে দেখি, আগুন জ্বলছে। কয়েকজন দুষ্কৃতী আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। তাদের ধাওয়া করে একজনকে ধরে ফেলি। তারপর চিৎকার করে গ্রামবাসীদের ডাকতে থাকি। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে গ্রামবাসীরা এসে আগুন নেভাতে সাহায্য করেন। কিন্তু আগুন নেভানো যাচ্ছিল না। দমকল আসার আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এবার সারা বছর কী খাব বুঝতে পারছি না।
তিনি বলেন, ব্যাঙ্ক থেকে কৃষিঋণ নিয়ে দুই ভাই এবছর ধান চাষ করেছিলাম। ফলনও ভালো হয়েছিল। ধান বিক্রি করে ঋণ শোধ করার কথা থাকলেও এখন কীভাবে সব করব তা ভেবে পাচ্ছি না। দীপকবাবু আরও বলেন, পুরনো শত্রুতার জেরে গ্রামের চারজন দুষ্কৃতী আমাদের ধানের গাদায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার পিন্টু পোদ্দার, রণজিৎ সাহা, প্রবীর সাহা ও মঙ্গল সাহার নামে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তার মধ্যে প্রবীরকে হাতেনাতে ধরে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, চাষি দীপক সাহা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে পুলিস তদন্ত শুরু হয়েছে। একজনকে ধরা হয়েছে। তিনজন পলাতক রয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। অনুমান করা হচ্ছে, আগুন লাগানোর আগে দুষ্কৃতীরা কেরোসিন তেল ব্যবহার করেছিল। হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন খতিয়ে দেখছে।
তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কোয়েল দাস বলেন, পশ্চিম কুস্তরিয়া গ্রামে পাকা ধানে আগুন লাগানোর ঘটনা শুনেছি। গ্রাম্য শত্রুতার জেরে দুষ্কৃতীরা এধরনের কাজ করেছে বলে অনুমান। পুলিস প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। দুষ্কৃতীরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব।
এই ঘটনায় এলাকার চাষিরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। কারণ সকলেরই জমির ধান মাঠে পড়ে রয়েছে। এইভাবে দুষ্কৃতীরা ধান পুড়িয়ে দিলে তাদের সারা বছরের পরিশ্রম ও অর্থ জলে যাবে।