পুরনো রোগ চাগাড় দেওয়ায় দেহকষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তীর্থ ভ্রমণ ও ধর্মকর্মে আত্মিক তৃপ্তিলাভ। ... বিশদ
শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডে মহানন্দা নদীর বাঁ পাশে অবস্থিত বাঘাযতীন কলোনি। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নদী ভাঙন রোধের কাজ শুরু করেছে সেচদপ্তরের শিলিগুড়ি ডিভিশন। এজন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করা হবে বলে সিপিএম প্রচারে করেছে বলে অভিযোগ। এই অভিযোগ পেয়ে এদিন সকাল ৯টা নাগাদ সংশ্লিষ্ট এলাকায় যান শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। দীর্ঘক্ষণ ধরে তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে তিনি বিক্ষোভ মিছিল করেন।
রঞ্জনবাবু বলেন, এখানে নদীর বাঁধ তৈরির কাজের জন্য কোনও বাসিন্দাকে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা নেই সরকারের। তা সত্ত্বেও বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করা হবে বলে স্থানীয় কাউন্সিলার তথা সিপিএম নেত্রী বিভ্রান্তি ছড়ান। এতে আতঙ্কিত হয়ে বাসিন্দারা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাই এখানে এসে সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে বাসিন্দাদের বোঝালাম। তাঁর অভিযোগ, পুর ভোটের আগে মিথ্যা কথা রটিয়ে তৃণমূল সরকারের বদনাম করার চেষ্টা করছেন ওই সিপিএম নেত্রী। তাঁর এমন কৌশল ধোপে টিকবে না। তাই তাঁর বিরুদ্ধে এদিন এলাকাবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবেই বিক্ষোভ মিছিল করেন।
সংশ্লিষ্ট এলাকা দীর্ঘদিন ধরে সিপিএমের দখলে। স্থানীয় কাউন্সিলার স্নিগ্ধা হাজরা সিপিএমের মহিলা সংগঠনের অন্যতম নেত্রী। তিনি দীর্ঘদিনের কাউন্সিলার। তৃণমূলের জেলা সভাপতি চলে যাওয়ার পর এদিন সংশ্লিষ্ট এলাকায় যান সিপিএম নেত্রী। তাঁকে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ অবশ্য তৃণমূলের অভিযোগ সাজানো বলে মন্তব্য করে। এরপর সন্ধ্যায় সংশ্লিষ্ট এলাকায় মিছিল ও সভা করে তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করে সিপিএম।
স্থানীয় কাউন্সিলার তথা সিপিএম নেত্রী বলেন, বাঘাযতীন কলোনি উদ্বাস্তু কলোনি। এই কলোনিতে উদ্বাস্তু বাসিন্দাদের বসিয়েছি আমরাই। তাই তাঁদের উচ্ছেদ করার কথা ভাবতেই পারি না। নদীর বাঁধ তৈরির জন্য তাঁদের জায়গা ছাড়ার বা উচ্ছেদ করার কথা বলিনি। কারণ বাসিন্দারা উদ্বাস্তু কলোনির সীমানার মধ্যেই বসবাস করছেন। তাঁদের কেউ নদীর চরে বসবাস করছে না। তাঁর অভিযোগ, ভোটের মুখে তাঁর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে তৃণমূল হাওয়া গরম করতে চাইছে। এসব করে ওরা ভোটের ময়দানে সুবিধা করতে পারবে না। ভোটে বাসিন্দারা ওদের যোগ্য জবাব দেবেন। এদিনের সভা থেকেই তা পরিষ্কার হয়েছে।
উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট এলাকায় নদী ভাঙন রোধের দাবি বহুদিনের। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট এলাকায় এবং মহানন্দা নদীর ডান পাশে পাড় বাঁধানোর কাজ চলছে। নদীর দু’পাশে মোট ১৪০০ মিটার এলাকাজুড়ে কাজ হবে। এরজন্য বরাদ্দ হয়েছে ২ কোটি ৫ লক্ষ টাকা। নদীর বাঁ পাশে অর্থাৎ বাঘাযতীন কলোনির দিকে পাড় বাঁধানোর কাজের ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। সেখানে কোনও কিছু উচ্ছেদ করা হবে না। তবে ডান পাশে কাজের সময় দু’ একটি ঝুপড়ি তুলতে হতে পারে। এই কাজ শেষ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট দু’টি এলাকায় রাস্তা তৈরি করা হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তর থেকে ওই অর্থ বরাদ্দ করা হবে। সেই কাজ শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়িত করবে বলে জানা গিয়েছে।